শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

এ.এম মিজানুর রহমান বুলেট কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৯, ১২:০২ এএম


কুয়াকাটা সৈকত ভাঙনরোধে পাউবো’র অর্থায়নে জিও ব্যাগ ও ব্যাগে ২ শ’ নম্বর সিপি বালু ভরে সৈকত রক্ষা বাঁধ দেয়ার নিয়ম থাকলেও সেখানে দেয়া হচ্ছে সৈকতের লোকাল বালু। সৈকত সুরক্ষার পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও যেমন খুশি তেমনভাবে করা হচ্ছে কাজ। এলোমেলোভাবে বসানো হচ্ছে জিও টিউব। ফলে সৈকতের সৌন্দর্য হারিয়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ভূতুরে পরিবেশ। কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তরিগড়ি করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিও ব্যাগ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিজেজিও টেক্সটাইল লিমিটেড কোম্পানি রাতের আঁধারে কাজ চালিয়ে আসলেও পাউবো কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে হতাশ হয়েছেন সৈকত প্রেমীরা।

পাউবো কলাপাড়া নির্বাহী কার্যালয় সুত্রে জানিয়েছে, সমুদ্রে সৈকত ভাঙনরোধে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫৬০ মিটার দৈর্ঘ্য মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের জন্য ১৫ এপ্রিল কার্য্যাদেশ দেয়া হয় বিজেজিও টেক্সটাইল লিমিটেডকে। যা চলতি সালের ৩০ জুন শেষ হবার কথা ছিল। সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকার পিকনিক স্পট থেকে শুরু করে কুয়াকাটা দাখিল মাদরাসা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার জিও ব্যাগে এ মেরিন ড্রাইভ রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে। এ রাস্তায় ৫৬টি জিও টিউব ও ৮হাজার পিচ জিও বস্তা দিয়ে নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি জিও টিউবের দৈর্ঘ্য হবে ৩০ মিটার এবং প্রস্থ হবে ৪ মিটার। প্রতিটি জিও বস্তার সাইজ হবে পিপি সাইজ। প্রতিটি জিও টিউবের রিভার সাইডে দুটি করে জিও বস্তা ২.৭৪ মিটার প্রস্থ এবং কান্টি সাইডে দু’টি করে জিও বস্তা ২.৭৪ মিটার উচু ব্যাগ দিয়ে এ মেরিন ড্রাইভ রাস্তা বা সৈকত সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করতে হবে এমন নির্দেশনা কোটেশনে রয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করা থেকে এ পর্যন্ত ৫৬ টি জিও টিউবের অর্ধেক জিও টিউবও তৈরী করতে পারেনি। যেসব টিউব তৈরী করা হয়েছে বালু বের হয়ে যাওয়ার কারনে অধিকাংশ টিউবই নাজুক হয়ে গেছে। ৮ হাজার জিও ব্যাগের মধ্যে অর্ধেকের বেশি জিও বস্তা তৈরি করলেও লোকাল বালু ভরার কারনে বস্তা থেকে বালু বের হয়ে গেছে এমনটাই দেখা গেছে।

পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর চৌকিদার অভিযোগ করেন, রাতের আধারে সৈকতের বালু দিয়ে জিও টিউব এবং জিও ব্যাগ ভরা হচ্ছে। কুয়াকাটা পৌরসভার কাউন্সিলর তোফায়েল আহম্মেদ তপু বলেন, এ পর্যন্ত যে কাজ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাতে ৫০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। অথচ নির্ধারিত সময় পেরিয়ে অতিরিক্ত আরো প্রায় ১মাস শেষ হতে চলেছে। কুয়াকাটা পৌর সভার প্যানেল মেয়র শাহ আলম হাওলাদার অভিযোগ করেন, এমন অনিয়মের বিষয় পাউবো কলাপাড়া প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জানালে সঠিক ভাবে কাজ হচ্ছে বলে তাকে জানানো হয়।

এসব বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বি.জে. জিও টেক্সটাইল লিমিটেড কোম্পানীর প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, তার প্রতিষ্ঠান দুবলার চরের পাশাপাশি দেশের একাধিক ভাঙণকবলিত এলাকায় কাজ করছেন। এ কাজ করার দক্ষ কোন প্রতিষ্ঠান নেই। তাদের প্রতিষ্ঠান এই কাজে দক্ষতা রয়েছে তাই পাউবো তাদের এক প্রকার এ কাজ করতে বাধ্য করেছে। মোটা বালুর পরিবর্তে সমুদ্রের বালু দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন বালুর ট্রাক আসতে দেরী হলে এমন হচ্ছে হয়তো। এ বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওলিউজ্জামান বলেন, লোকাল বালু দিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যদি লোকাল বালু দিয়ে কাজ করে থাকে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন