সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
সোনারগাঁ উপজেলা ভূমি অফিস দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নামজারিতে কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য হচ্ছে। সোনারগাঁ উপজেলার সাধারণ মানুষের কাছে ভোগান্তির অপর নাম উপজেলা ভূমি অফিসগুলো। সম্পত্তির নামজারিতে ঘুষের অর্থ দিয়েও ভোগান্তি এখন চরমে। উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টেবিলে প্রকাশ্যে চলছে কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য। আর এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে ভোগান্তি আরো বৃদ্ধি পায়। একটি নামজারীতে ঘুষ দেওয়ার পরও ঘুরতে হয় মাসের পর মাস। কিন্তু নামজারি হলে দেখা যাবে ৩ মাস পূর্বের তারিখে নামজারিটি হয়েছে। জানা গেছে, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন ২০১৩ অনুযায়ী ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তির নামজারিতে কোন বাধা নেই। কিন্তু সোনারগাঁ উপজেলা ভূমি অফিসে ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তির নামজারি করতে বিঘা প্রতি ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা করে আদায় করে সার্ভেয়াররা। বিভিন্ন কোম্পানী ও হাউজিং প্রতিষ্ঠানের নামজারিতে এলারফান্ডের নামে বিঘা প্রতি ২০ হাজার টাকা, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা আদায় করা হয়। এদিকে, উপজেলা ভূমি অফিসের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের অভাবে ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোর দুর্নীতি ও অনিয়ম আরো চরমে। সরেজমিনে উপজেলার সনমান্দি ভূমি অফিসে গেলে দেখা যায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নাম ভাঙ্গিয়ে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল করিম কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করছে। প্রতিটি নামজারির সাধারণ কেইস সই করতে তাকে দিতে হয় ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা। অর্পিত ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তিতে প্রতি শতাংশ প্রতি এ কর্মকর্তাকে দিতে হয় ৩ হাজার টাকা করে। নামজারী পর্চা সই করতে ১ হাজার টাকা ও খাজনা রশিদ কাটতে গেলে তাকে রশিদের অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিরেরচর মৌজার নাল জমির ভূমি উন্নয়ন কর দিতে যায় ইউসুফ নামের এক ব্যক্তি। আব্দুল করিম উক্ত সম্পত্তির খাজনা কাটতে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে খাজনার রশিদ কাটে প্রায় ১১ হাজার টাকা। এত অল্প টাকার রশিদে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আব্দুল করিম খাজনা রশিদে ভুল হয়েছে লিখে তা বাতিল করে। খাজনার রশিদ নং যথাক্রমে শ ১৪৪২৭ ও শ ১৪৪২৮, নামজারি রেজিস্ট্রার যাহার খতিয়ান নং ৩০৯। আর সরকারী কোন নিয়োগ ছাড়াই তার ভাগিনা নবি হোসেনের কাছে থাকে খাজনার রশিদ, আলমারীর চাবিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে জামপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনেনের বিরুদ্ধেও। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঞা জানায়, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন