শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ছাগল-ভেড়া পালন করে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগান ভোলা মিয়া

প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা

দুর্গম চরাঞ্চলের বাসিন্দা ভোলা মিয়া ছাগল-ভেড়া পালনের আয় দিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়ার খরচ চালায়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের রাঘব গ্রামের বাসিন্দা ভোলা মিয়া পৈত্রিক সূত্রে ২০/২২ বিঘা জমির মালিক। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদ প্রায় ৩ যুগ পূর্বে তার সহায় সম্পত্তি গ্রাস করে নেয়। ৭/৮ বার নদী ভাঙ্গনের ফলে বা¯ুÍভিটাসহ সর্বস্ব হারিয়ে ঠাঁই নেয় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের উজান বোচাগাড়ি গ্রামে। দীর্ঘদিন সেখানে বসবাসের পর পুরনো বা¯ুÍভিটা এলাকায় চর জেগে উঠায় পুনরায় অবস্থান নেন সেখানে। কিন্তু ফসলী জমি নদী গর্ভে থাকায় অভাব-অনটনে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতে থাকেন তিনি। জীবিকার তাগিদে হরিপুর খেয়া ঘাটে মাঝি মাল্লার কাজও করেন তিনি। এছাড়াও বসতভিটা এলাকায় ২/৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ, মরিচ, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন জাতীয় ফসল ফলাতে থাকেন। তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চলে তার। বেসরকারি সংস্থা গণউন্নয়ন কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সময় ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি। শিক্ষানুরাগী এ ব্যক্তি গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের উপজেলা শিক্ষা উন্নয়ন কমিটির একজন সদস্য। অতি কষ্টে সংসার  চালানোর পরেও সাংসারিক আয় দিয়ে প্রথমে ২টি ছাগল ও ২টি ভেড়া কিনে পালন করতে থাকেন। ছাগল ভেড়ার আয় থেকে বর্তমানে তার ১০টি ছাগল ও ১০টি ভেড়া খামারে রয়েছে। ছাগল ভেড়া বছরে ২ বার করে বাচ্চা দেয়। আর এ বাচ্চা বড় হলেই বিক্রি করে দেন। এভাবে ছাগল ভেড়া বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে ছেলে-মেয়ের পড়াশুনার খরচ চালান। ভোলা মিয়া জানান, প্রতি বছর ছাগল ভেড়া থেকে তার প্রায় ২৫/৩০ হাজার টাকা আয় হয়। যা ছেলে-মেয়ের পড়াশুনায় ব্যয় করি। ভোলা মিয়ার বড় ছেলে আরিফ গাইবান্ধা সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করছে। ২নং সন্তান রুবেল মিয়া হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি সালে এসএসসি পাস করেছে। ৩নং সন্তান ঝিনুক আক্তার রাঘব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ৪নং সন্তান শারমিন আক্তার একই বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে লেখা-পড়া করে। ৫নং সন্তান আকাশ মিয়া এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি। মৃত আঃ জলিল মিয়ার ছেলে আজাহার আলী ভোলার বয়স ষাট ছুঁই ছুঁই করছে। ভোলা মিয়ার কোন লেখাপড়া নেই। তবুও তার প্রবল ইচ্ছা ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে যেন মানুষের মত মানুষ হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন