ইফতেখার আহাম্মেদ, পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) থেকে
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র অদম্য মেধাবী রাকিব জেএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেলে ও অর্থের অভাবে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে পারেনি। বৃত্তি লাভের সংবাদ শুনে দিনমজুর রাকিব ভুট্টা ক্ষেতের কাজ ফেলে ছুটে আসে তার ভগ্নিপতির সেলুনে। সেখানেই কথা হয় রাকিবের সাথে। সে জানায়, আমরা তিন ভাই, আমি সবার বড়। সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম করা এবং দিনমজুর বাবার সাথে আমাকেও মানুষের জমিতে দিনমজুরের কাজ করতে হয়। বসতভিটার ২ শতক যে জমি ছিল তাও আমার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য আমার বাবা বিক্রয় করে দিয়েছেন। আমি ৮ম শ্রেণির পরীক্ষায় যখন জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করি তখন আমার ইচ্ছা ছিল বিজ্ঞান পড়া লেখা করে ডাক্তার হব। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে অনেক টাকা লাগে ও প্রতিটি বিষয় প্রাইভেট পড়তে হয় যার সামর্থ্য আমার নাই। তাই আমি মানবিক শাখায় ভর্তি হয়েছি। বর্তমানে আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমার মা অসুস্থ। আগে সে অন্যের বাড়িতে ঝি-এর কাজ করত বাবা ও দিনমজুরের কাজ করতেন। মা অসুস্থ হওয়ায় বাবা ও মা কেউ ঠিকমত কাজে যায় না। আমি কিছুদিন থেকে মানুষের ভুট্টা খেতে ভুট্টা তোলার কাজ করছি। আমার ভবিষ্যৎ জীবন এখন অন্ধকার। এত ভালো রেজাল্ট করেও আমার পড়ালেখা আর হলো না। এ কথা বলে সে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে। স্কুল শিক্ষক নুরু জানান, সে খুব ভালো ছাত্র। ৮ম শ্রেণিতে তাকে আমরা বিনা বেতনে স্কুলে পড়ার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। এমনকি টাকা-পয়সা ছাড়াই অনেক শিক্ষক প্রাইভেট পড়িয়েছে। তিনি আরও জানান, বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছিলাম কিন্তু সে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ভর্তি হতে পারেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন