শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

১০ দিন ধরে রোগী দেখছেন না ডাক্তার চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ি ফিরছেন শত শত রোগী

প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা

জরুরি বিভাগে রোগী দেখা নিয়ে ডাক্তার ও ব্রাদারের বিরোধকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে অচলাবস্থা চলছে। গত ১০ দিন ধরে বহিঃবিভাগে রোগী দেখছেন না চিকিৎসকরা। ফলে চিকিৎসা না পেয়ে প্রতিদিন ফিরে যাচ্ছেন শত শত রোগী। অচলাবস্থা নিরসনে কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একজন বৃদ্ধ রোগী জরুরি বিভাগে এসে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসমাইল হোসেনকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু চিকিৎসক ইসমাইল হোসেন ওই রোগীকে বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে বলেন। এই নিয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কর্তব্যরত ব্রাদার আজিমের কথা কাটাকাটি হয়। পরে সিভিল সার্জন ডাঃ প্রধান আবুল কালাম আজাদ এই ঘটনা তদন্তের জন্য ডাঃ বেনজির আহমদ, ডাঃ মনিরুল ইসলাম, ডা. নাদিম সরকার এবং এনটিসির অধ্যক্ষ মতিয়ারা বেগমের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এরই মধ্যে হঠাৎ করেই রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ ইসমাইল হোসেনকে পাবনা জেলার সাথিয়ায় বদলি করেন। কিন্তু এই বদলির প্রতিবাদে গত ২৯ মে থেকে হাসপাতালে কর্ম বিরতির ডাক দেয় চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হলেও পরবর্তী সময়েও ডাক্তাররা রোগী দেখছেন না। এতে করে গত ১০ দিন ধরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে হাসপাতালে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। ফলে বাধ্য হয়ে চিকিৎসা সেবা না নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। এ ব্যাপারে ব্রাদার আজিম অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন ওই বৃদ্ধ রোগী ডাঃ ইসমাইলকে স্যার সম্বোধন না করায় তিনি উত্তেজিত হয়ে রোগীকে গালিগালাজ করেন। এসময় তিনি ও স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল মোমিন ডাক্তারের এই আচরণের প্রতিবাদ জানান। এই নিয়ে ডাঃ ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে তার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। ব্রাদার আজিম আরো অভিযোগ করেন, ওইদিন ডাঃ ইসমাইল হোসেন তার চেম্বারের দরজা বন্ধ করে রোগী দেখার সময় অন্যান্য রোগীরা দরজা বন্ধ দেখে হৈ চৈ শুরু করলে তিনি ডাক্তারকে দরজা খোলা রেখে রোগী দেখতে অনুরোধ জানান। এতে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমি মেডিকেলে পড়ার সময় শিবিরের ক্যাডার ছিলাম, প্রয়োজনে মাস্তান নিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে রোগী দেখবো। পারলে কেউ ঠেকাক’। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ডাঃ ইসমাইল হোসেন জানান, আমি ওইদিন হাসপাতালে প্রথম দায়িত্ব পালন করছিলাম। কিন্তু কোনো রোগীর সাথে কোনো অসাদাচারণ করিনি। বরং কাটা-ছেঁড়ার কোনো রোগী এলে তিনি নিজেই সেগুলোর ড্রেসিং ও সেলাই করতেন। হাসপাতালে কর্মরত ওয়ার্ডবয় ও ব্রাদাররা তার এই কাজকে পছন্দ করেনি। কারণ তারা এই কাজের জন্য রোগীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আদায় করত। তিনি আরও বলেন, তিনি শিবির সমর্থক ছিলেন বটে, কিন্তু নেতা ছিলেন না। তাছাড়া তিনি শিবিরের নামে কোনো হুমকিও দেননি। অন্যদিকে জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ গোলাম রাব্বানী ফটিক অভিযোগ করে জানান, ব্রাদার আজিম সদর হাসপাতালের ডাঃ ইসমাইলকে লাঞ্ছিত করায় সিভিল সার্জন ও আরএমও’র কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হলেও তারা কোনো বিচার বা প্রতিকার করেননি। ফলে বাধ্য হয়েই কর্মবিরতি পালন করছে ডাক্তাররা। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালেরর আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শফিকুল ইসলাম জানান, আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার জন্য তিনি জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ গোলাম রাব্বানীকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন