ঈদ উৎসব এলে পাহাড়ি জনপদে বাঙালিরা উৎসবে মেতে ওঠে। মুসলমানদের বছরে বড় দু’টি উৎসব। পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। সমতলের চেয়ে পাহাড়ি জনপদে ভিন্ন ভাবে ঈদ উৎসব পালন করতে দেখা যায়। সমতল মসজিদে সকাল হলে নির্ধারিত একটি মসজিদে এক সঙ্গে ঈদের নামায আদায় করা হয়। এবং সকলে মিলে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় গিয়ে ঈদ আনন্দ করে।
কিন্ত পাহাড়ি এলাকায় তেমনটি নয়। ঈদ উৎসব এলেই পাহাড়ি জনপদে বিভিন্ন-বিভিন্ন এলাকায় নির্ধারিত মসজিদ থাকে কেউ পায়ে হেটে, কেউ নৌকা, ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে দূরে কোন মসজিদে নামায আদায় করতে দেখা যায়। অনেকে আবার দূরে মসজিদ থাকায় সঠিক সময়ে নামায আদায় করতে পড়ে না বলে অনেকের মন কষ্ট রয়েছে।
কাপ্তাই উপজেলাসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় যে সকল বাঙালি মুসলমান বসবাস করেন, তারা ঈদুল আজহার দিনে ভোরে ওঠে নিজেদের কুরবানির পশুটিকে সুন্দর করে গোসল করিয়ে প্রস্তত করেন। ঈদের নামাজের সঠিক সময় নামাজ আদায় করে একে-অপরকে নিয়ে পশুটিকে ঈমাম দিয়ে জবাই করে নিজ কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এরই মধ্যে শিশুরা এলাকা ও পাহাড়ি জনপদে কোন বিনোদন কেন্দ্রে বেড়াতে দেখা যায়। দুপুর ও সন্ধ্যায় শুরু হয় বড়দের পালা। যে যার মতো নিকট স্বজন ও বন্ধুর বাসায় বেড়াতে থাকে। ঈদ আনন্দে পাড়া ও এলাকায় দেখা যায় ঈদকে স্বাগত জানিয়ে ঈদ মুবারক অভিনন্দন জানাতে।
পাহাড়ি এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের একটি দ্বীপের গবাঘোনা বাসি ইসমাইল হোসেন জানান, আমরা এ দ্বীপে বসবাস করি ছোট এ দ্বীপের মধ্যে নামাজ শেষে দূরে কোথাও আমরা যেতে পারি না। তাই নিজ, নিজ এলাকায় আমরা ঈদ আনন্দ করি। এদিকে বিলাইছড়িস্থ কেংড়াছড়ি স্যাটেলারদের একই অবস্থা দেখা যায়। কেংড়াছড়ি মসজিদের ইমাম বলেন, ছোট এলাকা দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত বেশি দূরে যেতে চাইলেও যাওয়া যায় না। নিজ পাড়া ও পাহাড়ি এলাকায় একে অপরের বাসায় অনেক হাসি খুশি মনে বেড়াই।
এদিকে কাপ্তাই ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল আহাদ সেলিম জানান, পাহাড়ি এলাকায় নির্ধারিত স্থানে সীমাবদ্ধ এলাকাতেই ঈদ আনন্দ করে সবাই। বেশি হলে নিজ উপজেলা হতে অন্য উপজেলায় আত্মীয়-স্বজন থাকলে বেড়াতে যেতে দেখা যায়।
তবে দু’টি ঈদ উৎসব ২/৪ দিনে শেষ হয় না, বেশ কিছুদিন ধরে এ উৎসব সকলে মিলে পালন করে। সময় নিয়ে ধীরে, ধীরে একে অপরের বাসায় বেড়াতে দেখা যায়। তবে সকলের মধ্যে থাকে ঈদ উৎসব ও আনন্দ। পাহাড়ি জনপদে পরস্পর ভালোবাসা সুখ-দুখ বিনিময় করে প্রতি বছর পালিত হয় ঈদ উৎসব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন