নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রাম ইউপির ৪৩নং মাধাইমুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জোড়াতালি দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত কক্ষে চলছে পাঠদান। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের বেহাল দশা। বিদ্যুৎ ছাড়াই টিনের ছাউনির নিচে গ্রীষ্মের প্রচ- তাবদাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা করতে হয়। পরিত্যক্ত ভবন যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকসহ সচেতন মহল। ওই বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত মাটির ভবনের পশ্চিম দিকের দেয়াল ভেঙ্গে পড়ায় দরজা-জানালা, ছাউনির টিন, শিক্ষার্থীদের ব্রেঞ্চ, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাতের আঁধারে হারিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বারবার অবগত করেও কোন ফল হয়নি বলে জানান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রত্যন্ত জনপদে ১৯৬৯ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টি বর্তমানে নানান সমস্যায় জর্জরিত। কক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত মাটির ভবনের একটি কক্ষ সংস্কার করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত কক্ষে পড়াশুনা করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের কোন ব্যবস্থা না থাকায় গ্রীষ্মের সময় টিনের ছাউনির নিচে প্রচ- তাবদাহের মধ্য কোমলমতি ছেলেমেয়েরা কষ্ট করে ক্লাস করে। কক্ষ সংকটের কারণে প্রায় ত্রিশ বছর পূর্বে পরিত্যক্ত মাটির ভবনের একটি কক্ষ কোন মতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করে চলছে পাঠদান। শিক্ষার্থীদের জন্য নেই স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। চারজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও তিনজন শিক্ষক দিয়েই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুল চলাকালীন সময়ে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা সবার অজান্তেই ওই পরিত্যক্ত কক্ষে খেলাধুলা করে। যার কারণে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। একাধিকবার ঝড়ে এই ভবনের টিনের ছাউনিগুলো উড়ে যাওয়ায় অনেক জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের প্রধান ভবনের টিনের ছাউনি দিয়ে বৃষ্টি পড়ে। বৃষ্টি পড়ার কারণে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্রসহ জরুরি কাগজপত্রাদি নষ্ট হয়ে যায় বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজাহার আলী জানান। তিনি আরও বলেন, যদি এই পরিত্যক্ত ভবন ভেঙ্গে নতুন করে আধুনিক মানের ভবন ও শিক্ষার্থীদের জন্য পয়ঃনিষ্কাশন এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে একটি সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করতে পারবে এবং কক্ষ স্বল্পতার সমস্যা দূর হবে। ফলে এই প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার মানুষের মাঝে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানার প্রতি বাড়বে আগ্রহ। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মজনুর রহমান জানান এই বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন