জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজনে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় আজ রোববার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু বিষয়ক পুস্তক প্রদর্শনী ও বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ প্রতিযোগিতা।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল সকালে শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহযোগিতায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পাঁচ দিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল ও বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মিলন কান্তি নাথ। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উপ-পরিচালক সুহিতা সুলতানা। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশ বিরোধী যে ষড়যন্ত্র চলমান তাকে রুখে দিতে হলে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চার কোন বিকল্প নেই। আর স্কুল কলেজ পর্যায় থেকেই এই কাজটি শুরু করতে হবে।’
তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ ধরণের আয়োজন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন বাংলাদেশের সমার্থক। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধকে, বাংলাদেশের অস্তিত্বকে মেনে নিতে পারেনি, সেই পাকিস্তানের দোসররা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করেছে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিলীন করে দেয়ার জন্য।
সচিব শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। দেশের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য বঙ্গবন্ধুকে বেশি বেশি পাঠ করা প্রয়োজন। তিনি প্রতিটি শিক্ষার্থীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জীবন গড়ার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মিনার মনসুর বলেন, এ যাবৎ প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু বিষয়ক পুস্তক প্রদর্শনীর পাশাপাশি ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫০জন শিক্ষার্থী এই পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। প্রতিযোগিরা বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ উত্তর প্রতিক্রিয়া তুলে ধরবে তাদের শিক্ষক, অভিভাবক, সহপাঠী, অতিথি ও বিচারকমন্ডলীর সামনে। স্কুলগুলো হচ্ছে- রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল এন্ড কলেজ ও বিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ এবং নারায়ণগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ।
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক বলেন, বইপ্রেমিদের জন্য পাঁচদিনই উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী ও পাঠ কার্যক্রম। দরকারী বইটি কিনতেও পারবেন তারা।
উল্লেখ্য, ২৯ আগস্ট শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সমাপনী অনুষ্ঠানে পাঠ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করবেন।
শিল্পকলার জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই বই প্রদর্শনীতে বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, শিল্পকলা একাডেমী, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র স্টল দিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন