শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সাহায্যের আবেদন: কামলা খেটে শিক্ষক হওয়া জিয়ারুল কি হেরে যাবে ক্যান্সারের কাছে?

প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রেবা রহমান, যশোর থেকে

শিশুকাল থেকে জীবন সংগ্রামের প্রতিটি বাঁকে বিজয়ী হয়েছেন জিয়ারুল ইসলাম। কিন্তু আজ জীবনযুদ্ধে পরাস্ত চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় পা হারিয়ে। এক পা হারিয়েও টিকে ছিলেন অনেকটা মাথা উঁচু করে। কিন্তু অবশেষে মরণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে কি তিনি হেরে যাবেন? এই প্রশ্ন আজ বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে মানুষ গড়ার কারিগর জিয়ারুল ইসলামের কাছে। কঠোর অধ্যবসায়ে সফল হওয়ার দৃষ্টান্ত যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নওয়ালী গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে জিয়ারুল। পরের বাড়িতে কামলা খেটে, রাস্তায় মাটি কেটে কখনো টিউশনির টাকা দিয়ে নিজের পড়ার খরচ জুগিয়েছেন। জিয়ারুল যশোর এমএম কলেজ থেকে অর্থনীতিতে কৃতিত্বের সাথে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। জিয়ারুলের বড় বোন তাসলিমা জানান, নিজে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় পিতা চলে যান না ফেরার দেশে। বড় বোনদের অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। ৯ ভাইবোনের মধ্যে ছোট ২ ভাই জিয়ারুল ইসলাম ও খাইরুল বাশারকে নিজের সন্তানের মতো আদর-¯েœহ দিয়ে শিশু বয়স থেকে তাদের স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ শিখিয়েছেন। ওই বয়সে দর্জির কাজ করে ছোট ভাইদের লেখাপড়ার ভার নেয়াসহ তাদের মুখে দু’বেলা-দু’মুঠো অন্ন জোগাতে নেমে পড়েন জীবন সংগ্রামে। জিয়ারুল শ্রেণিকক্ষের একটি বেঞ্চের কোনায় তার হাঁটুতে আঘাত পেয়ে চিকিৎসা নেন বাগআচড়ার সদ্য প্রয়াত চিকিৎসক আব্দুল জলিলের কাছে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থপেডিক্স বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ আলী ও ডা. আব্দুর রউফের অধীনে চিকিৎসা নেন। পরে তাদের পরামর্শে খুলনা মেডিকেল কলেজে ডা. প্রফেসর আবু সাঈদের অধীনে চিকিৎসা নেয়াকালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঠানো হয় ঢাকার মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে। সেখানে ওই হাঁটুতে কেমোথেরাপি দিয়ে বলা হয় হাঁটুর অপারেশন করতে হবে। এরপর জিয়ারুল ভারতের কলকাতার বেলিভিউ ক্লিনিকে ডা. সুভাশিষের কাছে চিকিৎসা নেন। ডা. সুভাশিষ তাদেরকে জানান, হাঁটুতে ক্যান্সার না হলেও কেমো দেয়াসহ ভুল চিকিৎসার কারণে হাঁটুর উপরের অংশ থেকে কেটে ফেলতে হবে। এরপর বাংলাদেশে এনে ঢকা মিরপুর ডেল্টা ক্লিনিকে অপারেশন করা হয়। বড় বোন তাসলিমা চাকরি ছেড়ে স্কুলের ডোনেশনের টাকা ফেরত নিয়ে এবং জিয়ারুলের স্কুলের শিক্ষার্থী ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দানশীল ব্যক্তিত্ব ও আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় জিয়ারুলে চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে যায় প্রায় ২৩ লাখ টাকা। পরে ২০১৫ সালে জানুয়ারিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন জিয়ারুল। যোগ দেন উপজেলার চন্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এত কিছুর পর সুখেই কাটছিল তাদের ৩ ভাইবোনের সংসার। হঠাৎ দু’মাস আগে ডান-বাহুর নীচে ধরা পড়ে বড় টিউমার। বর্তমানে জিয়ারুল খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. মুকিতুল হুদার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন টিউমারে ক্যান্সারের জীবাণু আছে। এই মুহূর্তে তার চিকিৎসা খরচের জন্য প্রায় ৩ লাখ টাকা লাগবে। যা জোগার করা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই সমাজের বিত্তবান, দানশীলদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা- সঞ্চয়ী হিসাব নং- ৩৪১৫২৮৪৭, সোনালী ব্যাংক রাজগঞ্জ, মণিরামপুর, যশোর শাখা এবং সঞ্চয়ী হিসাব নং- ১৪৯৫৫, বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ঝিকরগাছা, যশোর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন