রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ইছামতি ও বাঙালি নদী আধুনিক চাষাবাদে বছরে কোটি টাকার মাছ উৎপাদনের সম্ভাবনা

প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম


টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর ও রায়গঞ্জের ইছামতি ও বাঙালি নদীতে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছের চাষ করে বিস্ময়কর অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, নদী দুটির প্রাকৃতিক অবস্থা ও অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করা যেতে পারে। এতে প্রায় ৫৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং বছরে দুই দফায় উৎপাদিত হবে প্রায় ৭৫ লাখ মেট্রিকটন মাছ ও ৪০ লক্ষাধিক টাকার রেণু পোনা। যার বাজারমূল্য হতে পারে প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা। স্থানীয়ভাবে মাছের চাহিদা পূরণ করেও প্রতি বছর রপ্তানি করা যাবে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মাছ। সংরক্ষিত পানি থেকে সেচের মাধ্যমে আবাদ করা যাবে প্রতি মৌসুমে নদীবর্তী প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এতে এলাকায় সেচকাজে ব্যবহত বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে প্রায় ৩৫ শতাংশ। সরেজমিন দেখা গেছে, কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী, চালিতাডাঙ্গা, গান্ধাইল, রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রক্ষগাছা, পাঙ্গাসী, নলকা, চান্দাইকোনা, ধানগড়া, ঘুড়কা ও ধুবিল ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি ও বাঙালি নদীর অধিকাংশ স্থানে খরা মৌসুমে চর জেগে ওঠে। নদীর এককালের গভীরতম দহগুলোতেও পানি থাকে সামান্য। এ সময় মা মাছের দল আশ্রয় নেয় এসব দহের পরিমিত জলাশয়ে। অনেক দহ আবার সেচে শুকিয়ে ফেলা হয়। এতে মা মাছের সঙ্গে বিভিন্ন জাতের পোনা ও জলজ প্রাণি সবংশে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আবার উভয় নদীতে ডালপালা ফেলে দুই শতাধিক কাঠা দেয়া হয়। এতে পানি কমার সঙ্গে-সঙ্গে অধিকাংশ মাছ আটকা পড়ে এসব কাঠায়। আশ্রয় নেয়ার জন্য অপেক্ষাকৃত গভীর জলাশয়ে মা মাছ যেতে পারে না। ফলে বছর বছর কমে যাচ্ছে মাছের উৎপাদন। মাছের উৎপাদন বাড়াতে প্রতি বছর উন্মুক্ত জলাশয়ে সরকারিভাবে যে বিপুল পরিমাণ মাছের পোনা অবমুক্ত করা হচ্ছে তা শুধু জলাঞ্জলিই হচ্ছে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কোনো কাজে আসছে না। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নদীর দহগুলোকে খনন করে পরপর একাকার করে দিতে পারলে সংরক্ষিত পানির আয়তন ও গভীরতা অনেক বৃদ্ধি পাবে। ফলে প্রচুর মা মাছ সারা বছর নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে ব্যাপকহারে প্রজনন করতে পারবে। এসব অভয়ারণ্যে বেনিফিসারিজ তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করে বছরে অন্তত ৫৫ হাজার দরিদ্র মৎস্যজীবীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাজিপুর ও রায়গঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, সরকারিভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মাছের অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা হয়েছে। কাজিপুর ও রায়গঞ্জের ইছামতি এবং বাঙালি নদীতেও মাছের একাধিক অভয়ারণ্য করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী আমজাদ হোসেন মিলন বলেন, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে উপযুক্ত তথ্য ও চাহিদার ভিত্তিতে যোগাযোগ করতে হবে। নদী দুটিতে মাছের উৎপাদন ও খরা মৌসুমে পানি সংরক্ষণে এই পদক্ষেপ যথেষ্ট ফলবান হতে পারে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন