শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

পাটে সুন্দরগঞ্জের চাষিদের স্বপ্নপূরণের আশা

প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা

সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় কৃষকদের মনে খুশি-খুশি ভাব বিরাজ করছেন। বুক ভরা আশা করছেন এবার বুঝি লাভবান হবেন। এ উপজেলায় কৃষকরা পাটের বীজ বুনন শুরু করেছেন চৈত্র মাসে। প্রচ- খরায় তারা সেচ দিয়ে পাটের জমি তৈরি করে বীজ বুনন করেছেন। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের চরের কৃষকরাই পাটের আবাদ করেছেন বেশি। আর উঁচু এলাকার কৃষকরা বৈশাখের বৃষ্টির উপর নির্ভর করে পাট চাষ করেছেন। চর এলাকায় আগাম আবাদের কারণ হল আষাঢ় শ্রাবণ মাসে বন্যার পানি আসার আগে যেন পাট কাটা শেষ হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৪ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে দেশি ১১৫ হেক্টর ও তোষা ৪ হাজার ২৫০ হেক্টর। দেশি পাটের জাত হচ্ছে ডি-১৫৪। তোষা পাট ওএম-৯২ জাতের ১৫শ’ হেক্টর এবং ৯৮৯৭ জাতের ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় একটু বেশি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে প্রতি বিঘায় দেশি পাট ৯.২৬ মণ এবং তোষা পাট প্রতি বিঘায় ১১ মণ। গত ২ বছর থেকে চাষিরা পাটের দাম ভাল পেয়েছে। এ বছরও ভাল দাম পাবে এ আশা নিয়ে কৃষকরা হিসেব কষছেন অতীতের আবাদের লোকশানগুলো পুষিয়ে উঠতে পারবে। পাটের আবাদ বেশি হয়েছে চরাঞ্চলগুলোতে। এখন মাঝে-মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে যা পাটের জন্য খুবই উপকারি এবং বাম্পার ফলনের সম্ভাবনাই বেশি। সারের অভাব না থাকায় সঠিক সময়ে জমিতে সার দিতে পেরেছে কৃষকরা। বৃষ্টি হওয়ার আগে বৈশাখের প্রচ- খরায় কিছু-কিছু জমির পাট নষ্ট হলেও এখন শ্যামল সবুজের সমারোহ ঘটেছে ক্ষেতে। সতেজ পাট প্রতিদিনই বেড়ে উঠছে। ইতোমধ্যেই অনেক জমির পাট ৬/৭ ফুট করে লম্বা হয়েছে। পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহের কারণ হলো ২/৩ ফুট লম্বা হওয়া পর্যন্ত শাক হিসেবে খেতে পারেন। যা থেকে শরীরের ক্যালরির ঘাটতি পূরণ হয়। পাট খড়িও বাজারে বিক্রি করে যথেষ্ট আয় করা যায়। বেশির ভাগ কৃষকই সাংসারিক চাহিদা পূরণের পর অবশিষ্ট পাট খড়ি বাজারে বিক্রি করেন। খোর্দ্দার চরের কৃষক মোস্তাক আহম্মেদ জানান, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। পাটের কচি পাতা তুলে শাক হিসেবে খেয়েছেন যাতে তরকারির বাজার খরচ হয়েছে কম। পাট পচানোর পর সোনালী আঁশ বিক্রি করে পরবর্তীতে পাট খড়ি বিক্রি করেও যথেষ্ট আয় করবেন বলে তার আশা। হরিপুর চরের কৃষক সাজু মিয়া জানান, ধান, চাল ও গমের মতো যদি সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পাট ক্রয় করত তাহলে কৃষকরা লাভবান হতো বেশি। তিনি আরো জানান, ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে পাটের বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় বিশাল অংকের লাভটা চলে যায় তাদের কাছে। তাই ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করতে যেন না পারে সেদিকে নজর রাখা দরকার। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান, চাষিদের সবসময় বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়। পরামর্শ মোতাবেক যারা চাষ করেছেন তাদের ফলন খুব ভাল হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন