রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জনসংখ্যা স্বল্পতা বিশ্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে

রয়টার্স /অ্যালাই সং | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

জ্যাক মা (বামে) ও ইলন মাস্ক


মানুষের জন্য আগামী দুই দশকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে মানুষের স্বল্পতা। ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা ও টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক বলেন, বিশ^ব্যাপী জনসংখ্যা হ্রাসের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হবে। গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সাংহাইয়ে বিশ^ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ আই) সম্মেলনে আধ ঘণ্টাব্যাপী কথাবার্তা চলাকালে এ দুই জন অল্প যে কয়েকটি বিষয়ে একমত হন তার মধ্যে একটি হল আরো শিশু গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা। দুই জন অন্য যা নিয়ে কথাবার্তা বলেন তার মধ্যে ছিল কম কর্মঘণ্টা, শিক্ষা, আয়ু ও মঙ্গলে অভিবাসনসহ এ আই সংশ্লিষ্ট বিষয়। জ্যাক মা ও ইলন মাস্ক ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে কিনা এ নিয়ে বিতর্কের সময় জ্যাক মা প্রথম জন্মহারের বিষয়টি উত্থাপন করেন।

মা বলেন, এখন চীনে প্রতি বছর এক কোটি ৮০ লাখ শিশু জন্ম গ্রহণ করে। কিন্তু এ সংখ্যা যথেষ্ট নয়। আমাদের এর চেয়ে আরো বেশি শিশু প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমি মনে করি মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ বা পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা সম্পদ কয়লা, তেল, বিদ্যুৎ নয়। সেরা সম্পদ হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ক। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে চীনে দেড় কোটি শিশু জন্ম নেয় যা পঞ্চাশ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

মাস্ক বলেন, তিনি মনে করেন আগামী দিনে জনসংখ্যা হ্রাস অথবা যাকে তিনি মানব সমাজের ভেঙে পড়া বলে আখ্যায়িত করেন তা মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। এটা ৭৭০ কোটি জনসংখ্যার বিশ্বের জন্য সমস্যা হবে। তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি বন্ধের আগে মানুষের সংখ্যা ১১ বিলিয়ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাস্ক জ্যাক মা’র উদ্দেশে বলেন, জন্মহারের ব্যাপারে আমি উদ্বিগ্ন যা আপনি আগে উল্লেখ করেছেন। অধিকাংশ লোক মনে করে যে বিশ্বে আমাদের মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। আমি মনে করি, আগামী ২০ বছরের মধ্যে বিশ্ব সবচেয়ে বড় যে সমস্যার সম্মুখীন হবে তা হচ্ছে জনসংখ্যার স্বল্পতা। জনসংখ্যা ভেঙে পড়ার উপর আমি জোর দিতে চাই। আগামী ২০ বছরে জনসংখ্যা স্বল্পতাই হবে বিশ্বের বৃহত্তম সমস্যা, জনসংখ্যা বিস্ফোরণ নয়।

মাস্ক কথা বলার সময় মা সিলিংয়ের দিকে তাকিয়েছিলেন। মা, যাকে মাস্ক কথা বলার সময় ক্লান্ত বা বিহ্বল মনে হচ্ছিল- তাকে শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎ চালিত গাড়ির উদ্যোক্তার সাথে একমত মনে হয়।
মা বলেন, আমি এর সাথে সম্পূর্ণ একমত। জনসংখ্যা সমস্যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হেেত চলেছে। চীনে ১৪০ কোটি জনসংখ্যা বিরাট ব্যাপার বলে মনে হয়। কিন্তু আমার মনে হয় আগামী ২০ বছরে আমরা দেখতে পাব যে জনসংখ্যা সমস্যা চীনের জন্য বড় সমস্যা বয়ে আনবে। আপনারা এটাকে ভেঙ্গে পড়া বলছেন। আমি এর সাথে একমত।

বিশ্বের বিশাল ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা মানুষের সংখ্যার ব্যাপারে বিশাল পার্থক্যের কথা গোপন করছে। বহু দেশের জনসংখ্যাই এখন কমছে। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জনসংখ্যার দেশ চীন ২০১৭ সাল থেকে জনসংখ্যা কমতে দেখছে। যদিও দেশটি কয়েক দশক পুরনো এক সন্তান নীতি ত্যাগ করেছে। চলতি বছরের গোড়ার দিকে বিখ্যাত থিংক-ট্যাংক সমাজ বিজ্ঞান একাডেমি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে আট বছরের মধ্যে এ বছরেই চীনের জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়া শুরু হতে পারে।

এদিকে জাপানে ২০১৮ সালে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ২৩০ জনেরও বেশি মৃত্যু ঘটেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১৮ সালে তিন লাখ ২৬ হাজার ৯০০ শিশুর জন্ম হয়েছে যা ১৯৬০ সালের পর সর্বনিম্ন। অন্যদিকে ইউরোপের এক বিরাট অংশে নারীরা একা থাকাকে পছন্দ করায় এবং অনেকেই বিয়ে করলেও কম সন্তান গ্রহণ করায় অনুরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এমনকি বিশ্বের সার্বিক জনসংখ্যা যদি আগামী ৮০ বছর ধরে বৃদ্ধি পেতে থাকে, বৃদ্ধ লোকদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকবে। মাস্ক সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে অভিবাসনকে যে বাতিল করে দিয়েছেন, তার কারণ এটাই। উভয়েই জনসংখ্যা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা আগেও জানিয়েছেন। মাস্ক গত জুনে এ বিষয়টি টুইট করেন।
মা এ বছর তার হাজার হাজার কর্মচারীকে আরো বেশি করে যৌন কর্ম সম্পাদন ও বেশি শিশু নিতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি এ উৎসাহ দেন চীনা কোম্পানিগুলোর কুখ্যাত একটানা ‘৯৯৬’ কর্ম ঘণ্টাকে সমর্থন করার অল্প সময় পরই। যার অর্থ সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করা।

সম্ভবত ভবিষ্যতে মানুষ তার উপদেশ অনুসরণ করার জন্য বেশি সময় পাবে যখন এ আই এ রকম অবস্থা তৈরি করবে যে মানুষের সপ্তাহে মাত্র ১২ ঘণ্টা কাজ করার দরকার হবে। গত ২৯ আগস্ট জ্যাক মা এমনটাই কল্পনা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
মাহিন আদনান ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৫ এএম says : 0
সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার। মহান আল্লাহ তায়ালা যে বেশি বেশি সন্তান নিতে বলেছেন আজ তার বাস্তবতায় বেরিয়ে আসছে। অথচ বেশিরভাগ মানুষ জনসংখ্যাকে বোঝা মনে করছে।
Total Reply(0)
হাঃমাওঃ শিব্বির আহমদ হাবিবী ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৬ এএম says : 0
এতদিন ‍শুনে আসলাম অতিরিক্ত জনসংখ্যা উন্নয়ন ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আজ সব মিথ্যা দেখি। ইসলামের বাণীই সত্য।
Total Reply(0)
নাহিয়ান ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৬ এএম says : 0
অথচ কথিত বিশেষ-অজ্ঞরা বলেন, জনসংখ্যা কমাতে হবে, নতুবা পৃথিীব নাকি বসবাস অযোগ্য হয়ে যাবে।
Total Reply(0)
জহির আল যাবের ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৭ এএম says : 0
তার মানে বোঝা যাচ্ছে বিশ্ববাসীকে হাদিসের কথায় মানতে হবে। কোনো উপায় নেই।
Total Reply(0)
বাহলুল ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
যেসব কথিত বুদিধজীবীরা ইসলামের বেশি বেশি সন্তান নেওয়ার নীতিকে সমালোচনা করেন তারা এখন কী বলবেন দেখি।
Total Reply(0)
Nazrul Islam ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১০:০৪ এএম says : 0
আমি তাদের সাথে একমত
Total Reply(0)
nisarul islam ১৬ জুলাই, ২০২০, ১১:৫০ পিএম says : 0
১৯৮১ সালে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে ইত্তেফাকে একটি নিবন্ধে পড়েছিলাম, পৃথিবীর ধারন ক্ষমতা ৩০০০ কোটি মানুষ । কিন্তু প্রাকৃতিক কারনেই পৃথিবীতে কখনোই জনসংখ্যা এতো বেশী হতে পারবেনা ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন