টাঙ্গাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ১১১ ও সহকারী শিক্ষক পদে ৯১৩টি শূন্য পদ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পদে বিপুল সংখ্যক পদ শূন্য থাকায় শিক্ষক স্বল্পতার কারণে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। ফলে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি হাজার হাজার শিশু-কিশোর। যে সকল বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই, সেই সব বিদ্যালয়ে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের চলতি দায়িত্বে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন করা হয়েছে। এতে করে বিপুল সংখ্যক সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মামলাজনিত কারণে ৬৪টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। জেলায় রাজস্বখাতভুক্ত সহকারী শিক্ষক শূন্য পদে ৩৪৪ জন, প্রাক-প্রাথমিক সৃষ্ট পদে ৭৯ জন, চলতি দায়িত্ব পদায়নজনিত শূন্য পদে ৪৯০জনের পদ খালি রয়েছে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক পদে ৪৭ জন ও মামলাজনিত কারণে ৬৪ জন প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মামলাজনিত কারণে ৬৪টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয় থেকে যে সকল সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন অথচ জাতীয়করণের সময় প্রধান শিক্ষক হিসেবে তাদের নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়নি এবং প্রধান শিক্ষক হিসেবে বেতন স্কেল প্রদান করা হয়নি, সেই সকল সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দাবিতে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করার কারণে ওইসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘাটাইলে ২০টি ও সখিপুরে মামলাজনিত কারণে ৮টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়াও বাসাইলে মামলাজনিত কারণে ৮টি, সদরে মামলাজনিত কারণে ৩টিসহ ৭টি , কালিহাতীতে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করার কারণে ৯টিসহ ২৪টি, মধুপুরে ১৫টি, নাগরপুরে মামলাজনিত কারণে ১৩টিসহ ২১টি ও ধনবাড়িতে মামলাজনিত কারণে ৮টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এছাড়াও ঘাটাইলে রাজস্বখাতভুক্ত সহকারী শিক্ষক শূন্য পদের সংখ্যা ১৩, প্রাক-প্রথামিক সৃষ্ট শূন্য পদের সংখ্যা ৮, চলতি দায়িত্ব পদায়নজনিত শূন্য পদের সংখ্যা ৫৫। সখিপুরে রাজস্বখাতভুক্ত সহকারী শিক্ষক শূন্য পদের সংখ্যা ৭৫, প্রাক-প্রাথমিকে ৪, চলতি দায়িত্ব পদায়নজনিত শূন্য পদেও সংখ্যা ৪৫। গোপালপুরে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ৯৬, প্রাক-প্রাথমিকে ৬, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৫২। বাসাইল রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ৪, প্রাক-প্রাথমিকে ৬, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৪০। সদরে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ১, প্রাক-প্রাথমিকে ১, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ২৯। দেলদুয়ারে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ১, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৩৪। মির্জাপুরে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ১০, প্রাক-প্রাথমিকে ১৭, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৬০। কালিহাতীতে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ৩, প্রাক-প্রাথমিকে ৫, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৫১।
মধুপুরে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ২৮, প্রাক-প্রাথমিকে ১২, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৩১। নাগরপুরে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ৫৮, প্রাক-প্রাথমিকে ১০, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৩৪। ভূঞাপুরে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ২৯, প্রাক-প্রাথমিকে ৩, চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ৩৭। ধনবাড়ীতে রাজস্বখাতভুক্ত শূন্য পদের সংখ্যা ২৬, প্রাক-প্রাথমিকে ৭ ও চলতি দায়িত্বে শূন্য পদের সংখ্যা ২২। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক হারুনার রশীদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক শূন্যতার কারণে মানসম্মত পাঠদানে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শিক্ষার গুণগতমান ও কাংক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।’ এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘জেলার প্রধান ও সহকারী শিক্ষক শূন্য পদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠনো হয়েছে। দ্রতই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন