শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নানা সঙ্কটে সেবাবঞ্চিত রোগীরা

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

বেনাপোল অফিস | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন নিজেই রোগী, দেখার যেন কেউ নেই। চিকিৎসকস্বল্পতা, যন্ত্রপাতি অপ্রতুল, অপরিচ্ছন্নতা, রোগীদের ওষুধ সরবরাহ থেকে বঞ্চিত করাসহ নানা সঙ্কটে জর্জরিত শার্শা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

জানা যায়, শার্শার ১১টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ কয্যা বিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৬২ সালে নির্মিত হাসপাতালটি এখন শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র নির্ভরতা। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোনো সুযোগ-সুবিধাই বাড়েনি এ হাসপাতালে। লোকবল, যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সামগ্রীসহ সবকিছু এখনও পুরনো ধাঁচের। হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৩ কতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। গড়ে পাঁচ থেকেআটজন রোগী ভর্তি হন।

তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে মেডিকেল কর্মকর্তার পদ সংখ্যা ২২টি থাকলেও খাতা কলমে ৪ জন, কর্মরত আছেন ৩ জন। বাকি১ জন সবসময় ছুটিতে থাকেন। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকেহাসপাতালটি ৫০ কয্যায় উন্নীত হলেও এখানে কোনো জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। বর্হিবিভাগে টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও চিকিৎসকনা থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।

হাসপাতালটিতে একমাত্র এক্স-রে মেকিনটি প্রায় সময়ই নষ্ট। মাঝে মধ্যে মেরামত করা হলেও থাকেনা ফ্লিম। অপারেকন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় গরিব ও অসহায় রোগীদের বাধ্য হয়ে ৩৬ কিলোমিটার দূরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়।
বেনাপোল থেকেআগত পাতলাপায়খানা আক্রান্ত রোগী কামাল (৪২) বলেন, হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগ থাকা সত্তে¡ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরের ক্লিনিকেপাঠানো হয়। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে। অসহায় দরিদ্র রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি স্বাস্থ্য সেবা থেকে।

উপজেলার নাভারন থেকেআসা রোগী নজরুল ইসলাম (৩৫) অভিযোগ করে জানান, এখানকার রোগীরা হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ পান না। জরুরি বিভাগে সাধারণ চিকিৎসা দেয়া, রোগীদের অতি নিম্নমানের খাবার ও নোংরা বিছানা পরিবেকন করা হয়। কৌচাগারগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। সার্জারি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও অপারেকন থিয়েটার ও যন্ত্রপাতির সংখ্যা বাড়েনি। হাসপাতালে নেই কোনো ডেন্টাল, গাইনি ও মেডিসিন বিকেষজ্ঞ।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টায় অফিস শুরুর নিয়ম থাকলেও ডাক্তার আসেন সাড়ে ১০টায়। উপজেলার একমাত্র সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীরা সকাল ৮টার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ১০টার আগে বর্হিবিভাগে টিকিট দেয়া হয় না। অনেকসময় টিকিট সংগ্রহ করেও চিকিৎসকের দেখা পান না রোগীরা। বাধ্য হয়ে পাকের বেসরকারি হাসপাতালই তাদের ভরসা।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এনাম উদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে আমার ডিউটি করার কথা না ডাক্তার স্বল্পতার কারণে আমাকেই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আমরা যেটুকু করি তা রোগীদের অনুরোধে করি। সেখানে শুধুমাত্র একজন সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তার ডিউটি করার নিয়ম। আসলে জরুরি বিভাগে কোনো মেডিকেল কর্মকর্তার ডিউটি করার নিয়ম নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অশোক কুমার সাহা জানান, হাসপাতালটি ৫০ কয্যা করা হলেও প্রয়োজনীয় জনবল বাড়ানো হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন