শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

অনিয়মে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ চিকিৎসক সংকটে কাউখালীতে স্বাস্থ্যসেবার বেহাল অবস্থা

প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হাফেজ মাছুম বিল্লাহ্, কাউখালী (পিরোজপুর) থেকে

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দুই জন চিকিৎসক মাত্র। জোড়া-তালি দিয়ে চলছে লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসক সংকট ছাড়াও ৮ বছর পূর্বে ঘোষণা করা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুয়ে পানি পড়া, সিলিং ও ভিম থেকে কংক্রিট ভেঙে পড়া নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার লক্ষ্যে তিন তলা নতুন ভবন নির্মাণ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। চিকিৎসক ও কর্মচারীদের আবাসস্থলে অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। যে কোন সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা চিকিৎসক কর্মচারীদের। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোও চলছে নামকাওয়াস্তে এর কর্মকা- মনিটর করারও কোন ব্যবস্থা নেই। সব মিলিয়ে উপজেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় করুণ হাল বিরাজ করছে। পিরোজপুর জেলার ৭৯.৬৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কাউখালী উপজেলাটি পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। উপজেলা সদরের উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৯ জন এবং ৫ ইউনিয়নে ৫টি এফডব্লিউসিতে একজন করে চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ছিদ্দিকুর রহমান ও শিয়ালকাঠি এফডব্লিউসি তে ডা. ওসমান গনি কর্মরত আছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকায় শিয়ালকাঠি এফডব্লিউসি থেকে ডা. ওসমান গনিকে ডেপুটেশনে নিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহে কোন তদারকি বা পরিদর্শনের ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলোর অধিকাংশ চলে না চলার মতো। ফলে লক্ষাধিক মানুষ সব ধরনের চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক মো. ছিদ্দিকুর রহমান জানান দীর্ঘদিন ধরে কাউখালী উপজেলায় ডাক্তার সংকট, ভবন সমস্যায় ভুগতেছেন। বহুবার আবেদন-নিবেদনের পর ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করণের জন্য ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলে ঠিকাদারের ও প্রকৌশল বিভাগের দুর্নীতির কারণে তা বন্ধ হয়ে গেছে। ৮ বছর পূর্বে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ঘোষণা করা জরাজীর্ণ ভবনের মধ্যে চলছে হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসা। এখন ভর্তি আছে ২০ জন রোগী। কিছুদিন পূর্বে একটি উজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি সংস্কার কাজ করা হয় কিন্তু তার মান অত্যান্ত নিম্নমানের হওয়ায় আগের অবস্থায়ই বিরাজ করছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মো. ছিদ্দিকুর রহমান। চিকিৎসকের বিষয়ে বলেন, বার বার আবেদন করার পর তিনজন চিকিৎসক পোস্টিং দেওয়া হলেও তারা কেউই এখানে নেই। এক বছর পূর্বে ডেন্টাল সার্জন হিসেবে ডা. লিটন ভুষন বড়াল কে পদায়ন করা হলেও তিনি যোগদান করে সেদিনই ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চলে যান। অপর এক মেডিকেল অফিসার গত ৭/৫/২০১৬ তারিখে যোগদান করেই ৫ দিনের ছুটিতে যান। ছুটিতে গিয়ে ফিরে না আসায় দুইবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠি ফেরৎ এসেছে। গত সপ্তাহে দেড় মাসের মেডিকেল ছুটির আবেদন পাঠিয়েছেন। আর একজন মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়ালিউর মিরাজ দুই মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ফখরুল আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যা রয়েছে। আমাদের কাজ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে বিষয়টি জানানো। বার বার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি মহোদয়কেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। সর্বোপরি এলাকার সংসদসদস্য পরিবেশ ও বনমন্ত্রী মহোদয়ের সাথেও বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন