হাতিয়া ওছখালী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাহাতে জান্নাত মোসা. ফেরদাউস আক্তারের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, তিনি ১৯ মার্চ ২০১৮ তারিখে অত্র বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে যোগদানের পর থেকে নিয়মিত কর্মস্থলে থাকেন না। আবার কর্মস্থলে থাকলেও কোন শেণি শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন না। ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সময় ১ হাজার টাকা করে আদায় করা হলেও তিনি শিক্ষার্থী প্রতি ব্যাংকে জমা দেন ৪ শ’ টাকা। জেএসসি ও এসএসসি রেজিস্ট্রেশন ও ফরম পুরণের সময় এসে ঝটপট কার্যক্রম শেষ করে টাকা পয়সা নিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশী টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে মালামাল ক্রয় না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ কারার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক ১. মো. ফারুক উদ্দিন, পিতা-হাজী আবদুল মালেক, ২. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, পিতা-মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, ৩. ইমাম হাসান, পিতা-মো. মোসলেহ উদ্দিন লিখিতভাবে প্রধান শিক্ষক রাহাতে জান্নাত মোসা. ফেরদাউস আক্তারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের ক্লাশ রুটিনে তার কোন কর্মবন্টন নেই। তিনি ২৭ জুন ২০১৯ তারিখে কর্মস্থল ত্যাগ করলেও ৭ আগস্ট তারিখের স্বাক্ষর দিয়ে একটি নোটিশ জারি করে যান। ওই নোটিশে তিনি লিখে যান, ৮ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জেএসসি রেজিস্ট্রেশন ফি সর্বসাকুল্যে ৮৫ টাকা। কিন্তু ওছখালী হাইস্কুলের এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী প্রতি ৪ শত টাকা হারে আদায় করেন বলে অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়। জেএসসির ফরম পুরণের ফি বোর্ড কর্তৃক ১ শত টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হলেও তিনি শিক্ষার্থী প্রতি ৪ শত টাকা করে আদায় করেন বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। সরকার থেকে বাসা ভাড়া ফেলেও তিনি বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষ দখল করে স্বামীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে রাত্রী যাপন করে থাকেন। শ্রেনী কক্ষ ব্যবহার বাবদ সরকারি কোষাগারে কোন অর্থ তিনি জমা করেননি।
তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় তিনি প্রধান শিক্ষকের কলামে স্বাক্ষর করেন না। তিনি হাজিরা খাতার নিচের অংশে লিখা থাকা উর্দ্ধতন কর্র্তৃপক্ষের কলামে স্বাক্ষর করেন। তিনি নিজেকে উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বলে সহকারী শিক্ষকদের নিকট পরিচয় দেন। এজন্য শিক্ষক সংকট থাকা সত্বেও তিনি কোন শ্রেনীতে কোন ক্লাশ নেন না। সরকারিভাবে ১৫ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও কর্মরত আছে ৫ জন। প্রধান শিক্ষকের পদটি ১৯৮৮ সনে জাতীয় করনের পর থেকে শুন্য।
জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বিভিন্ন খাতে মোট অতিরিক্ত বরাদ্দের ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দের ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের ১ লাখ ৮৫ হাজারসহ সর্বমোট ৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যয় না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাহাতে জান্নাত মোসা. ফেরদাউস আক্তার বলেন, সরকারি বরাদ্দের টাকা খাত-ওয়ারি ব্যয় করা না হলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট পূরণে নিয়োজিত অতিথি শিক্ষকগণের সম্মানী ভাতা দেয়া হয়। ফরম পূরণ ও রেজিস্ট্রেশন বাবদ অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে বলেন, অন্য বিদ্যালয়ে যে হারে নেয় আমিও একই হারে ফি আদায় করি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন