দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিবিদরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তাদের মাথা ন্যাড়া করে ফেলছেন। সর্বশেষ জনসমক্ষে মাথা ন্যাড়া করেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা হোয়াং কিও-আহন। সোমবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে সমর্থক ও সাংবাদিকদের সামনে ন্যাড়া হন তিনি। এর আগে গত সপ্তাহে দুই নারী এমপিও একই কায়দায় ন্যাড়া হয়েছেন।
অনেকেই প্রশ্ন করছেন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নিজেদের মাথা ন্যাড়া করতে হবে কেন। এর উত্তরে তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় মাথা ন্যাড়া করে প্রতিবাদ জানানো তাদের একটি ঐতিহ্যের অংশ। এর মাধ্যমে তারা সরকারসহ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন। প্রতিবাদকারীরা জানান, তাদের প্রতিবাদ মূলত নতুন বিচারমন্ত্রী চো কুকের বিরুদ্ধে। চোয়ের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। তাই চোয়ের পদত্যাগ দাবিতে বিরোধী দলের সদস্যরা মাথা ন্যাড়ার এই কর্মসূচি বেছে নিয়েছেন। আইনের সাবেক অধ্যাপক চো কুক প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সহযোগী। গত সপ্তাহে তাকে আইনমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে আগে থেকেই কুকের পরিবারের বিরুদ্ধে শিক্ষাগত জালিয়াতি ও আর্থিক অপরাধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল। কুকের স্ত্রীও আইনের শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও তার বৃত্তি নিশ্চিত করতে শিক্ষা সনদ নিয়ে জালিয়াতি করেছিলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিবাদ জানাতে মাথা ন্যাড়া করার বিষয়টি প্রাচীন কনুফিশীয় শিক্ষা থেকে এসেছে। ঐতিহাসিকভাবে একে প্রতিবাদ জানানোর ভাষা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। ষাট ও সত্তরের দশকে সেনা শাসনে থাকার সময় ভিন্ন মতাবলম্বীরা প্রতিরোধের চিহ্ন হিসেবে মাথা ন্যাড়া করে রাখতেন। ২০০৭ সালে ইচিওন শহরে বিতর্কিত এক শিল্পকারখানা স্থাপনের প্রতিবাদে শতাধিক বাসিন্দা মাথা ন্যাড়া করেছিলেন। ২০১৮ সালে নারীদের টয়লেট ও পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে লুকিয়ে রাখা ক্যামেরার বিরুদ্ধে মাথা ন্যাড়া করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অনেক নারী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন