বেনাপোল- যশোর ও নাভারণ-সাতক্ষীরা মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহন। রাত-দিন মহাসড় থ্রি-হুইলারের দখলে থাকলেও চলাচল বন্ধে হাইওয়ে পুলিশের নেই কোনো মাথাব্যথা। তারা উৎকোচে সন্তুষ্ট। মাঝেমধ্যে লোক দেখানো দুই একটি থ্রি হুইলার আটক করে মামলা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের শার্শার নাভারণ সাতক্ষীরা মোড় থেকে বেনাপোল, বাগআঁচড়া থেকে নাভারণ সাতক্ষীরা মোড় পর্যন্ত অবাধে চলাচল করছে মাহেন্দ্রা।
সাতক্ষীরা মোড়ে তৈরি করা স্ট্যান্ড থেকে কয়েক মিনিট পরপর বেনাপোল ও বাগআঁচড়ায় ছেড়ে যাচ্ছে মাহেন্দ্রাগুলো। সড়কে মাহেন্দ্রার পাশাপাশি চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলার ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান, নছিমন ও করিমন। এছাড়া ঝিকরগাছা-লাউজানী, নাভারণ-নবীবনগর, গদখালী-ঝিকরগাছা ও বেনেয়ালী-ঝিকরগাছা রুটে অবৈধ ১৩০টির মতো তিন চাকার যান চলাচল করছে।
কাগজে-কলমে এখনো এসব মহাসড়কে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কাগজপত্রবিহীন, ফিটনেসবিহীন এসব তিন চাকার যান। কখনও সোজা, কখনও উল্টো পথে চলাচলের ফলে বাড়ছে ঝুঁকি। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা। অকালে প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। আবার পঙ্গুত্ববরণ করছেন অনেকে।
অভিযোগ রয়েছে, নাভারণ হাইওয়ে পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে ম্যানেজ করে এগুলো চলাচল করে। প্রতি থ্রি-হুইলারচালককে মাসিক সাড়ে ৫০০ টাকা ও ইজিবাইক সাড়ে ৪০০ টাকা, মালবাহী আলমসাধু, নসিমন, করিমন ও ভটভটি চালককেও এককালীন এক হাজার করে টাকা দিতে হয়। পৌর এলাকার মহাসড়কে চলাচল করতে পৌর কর্তৃপক্ষের নামেও এ সকল চালকদের কাছ থেকে তোলা হয় নির্দিষ্ট পরিমাণের চাঁদা।
বেশ কয়েকজন থ্রি-হুইলারচালক আবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মহাসড়কের পাশ দিয়ে বা বাইপাস দিয়ে পৃথক কোনো সড়ক নেই। মহাসড়কে যান চালাতে না পারলে তাদের পরিবারের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ঝুঁকি নিয়ে তাদের মহাসড়কে উঠতে হয়। মাঝে মাঝে পুলিশ পুলিশ এগুলো আটকালে ‘টাকা দিয়ে’ রফা করতে হয়। কখনো তিন চাকার যানবাহন ফাঁড়িতে নিলে ফিরিয়ে আনতে ন্যূনতম ৫ হাজার টাকা লাগে।
যশোর জেলা বাস মালিক সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান জানান, মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধের দাবিতে বিগত দিনে প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
নাভারণ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিটো কুমার নাথ বলেন, মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধে স্বোচ্চার ভূমিকা পালন করা হচ্ছে। একাধিক গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। টাকা নিয়ে অবৈধ এ সকল যান চলাচলের কোনো সুযোগ দেয়া হয় না বলে তার দাবি।
হাইওয়ে যশোর সার্কেলের এএসপি মোহাম্মদ ফরহাদ দাবি করেছেন, গত এক মাসে ২ শতাধিক থ্রি-হুইলার আটক করা হয়েছে। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির কোনো সদস্য যদি টাকা নিয়ে অবৈধ যান চলাচলের সুযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন