কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নের আজ্ঞাপুর আছমত আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো সঙ্কটে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদেরকে সঠিকভাবে পাঠদান করতে পারছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, মূল সড়ক থেকে অনেকটা দূরে আজ্ঞাপুর আছমত আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণী থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত উক্ত বিদ্যালয়ে মোট ১৪১ জন ছাত্র/ছাত্রী বিদ্যালয়ের দেয়ালে লেখা থাকলেও বাস্তবে ছাত্র/ছাত্রীর উপস্থিতি আরো কম।
প্রাক-প্রাথমিকে ২৫, ১ম শ্রেণীতে ৪০, ২য় শ্রেণীতে ২৫, ৩য় শ্রেণীতে ২৫, ৪র্থ শ্রেণীতে ২৩ এবং ৫ম শ্রেণীতে ১৯ জন ছাত্র/ছাত্রী আছে মর্মে স্কুলের দেয়ালে লেখা রয়েছে।
বিদ্যালয়ের সদস্য মো. কামরুল হাসান মেম্বার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম জানান, শ্রেণীকক্ষের অভাবে শিক্ষকরা সঠিকভাবে পাঠদান করতে পারছে না। বিদ্যালয়ের পূর্ব দিক দিয়ে প্রবেশ পথে উত্তর দিক দিয়ে বয়ে আসা একটি নর্দমার ড্রেইনও রয়েছে। যেটি পাড়ি দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হয়। বলাবাহুল্য নর্দমার ড্রেইনটি শিশুস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। ক্লাশ রুমের অভাব প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাশটি প্রধান শিক্ষকের রুমের এক কোনে পাঠদান কার্যক্রম সংঘটিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়টি ১৯৯৬ সনে স্থাপিত। দেখতে ইটের তৈরি মনে হলেও স্কুলের ওয়ালগুলোর রং অসদৃশ হয়ে গেছে। ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ও ছাদের পলেস্তরা খসে গেছে। যে কোন মূহুুর্তে শিক্ষার্থীদের উপর তা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের সবাই মহিলা। কোন পুরুষ শিক্ষক নেই।
বিদ্যালয়টি অবস্থান মেইন সড়ক থেকে অনেকট দূওে, অজোপাড়া গায়ের ভেতরে অবস্থান বিধায় স্থানীয়রা ব্যাতিত প্রকৃতপক্ষে ওইখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে তা সকলের অজানা। এক পর্যায়ের বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কিভাবে সরকারের কাছ থেকে অবকাঠামো নির্মাণে সাহায্য পাওয়া যায় এ নিয়ে সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দীন মাস্টারের সাথে ও মুঠো ফোনে কথা হয়। তিনি জানান, বিশেষ কাজে ঢাকা যাচ্ছেন, আসলে সাক্ষাতে কথা হবে।
পরিশেষে বলা যায়, আজ্ঞাপুর আছমত আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান ও ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা এমন একটি নয়। এমন ধরণের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা বুড়িচং উপজেলায় অনেক রয়েছে। যেগুলোর শিক্ষকের সংখ্যা ঠিক থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ঠিক নেই। আবার ছাত্র/ছাত্রী থাকলেও অবকাঠামো নেই। নানা সঙ্কট ও জটিলতায় দিনাতিপাত করলেও এ যেন দেখার কেউ নেই। অথচ সরকারি কোষাগার থেকে বেতন ভাতাদি সঠিক ভাবেই সবাই পাচ্ছেন। শিক্ষকদের বেতন বাড়লেও তাদের টাকায় একটি ভালো ঘন্টা কিনবে এটাও যেন অনেক বিদ্যালয়ে সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন