কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা
জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে ভাসছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার গ্রামের পর গ্রাম। ভাঙ্গা বাঁধের অংশ দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ করে উপজেলার মহিপুর, চম্পাপুর, লাতাচাপলী ও নীলগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তত : ৩০ গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক জোয়ার ও অতিবৃষ্টি পানিতে আবারো বাড়িঘরসহ ফসলি জমি ৩/৪ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানি ক্রমশ বাড়ায় ওইসব গ্রামের মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অতিবৃষ্টি তালিয়ে যাওয়ায় পানি বন্দী কৃষকদের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। অধিকাংশ মানুষ এখন অনেকটাই জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভরশীল হয়ে পরেছে। গত সোমবার সকাল থেকে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ট করা হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর তা-বে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। ভাঙ্গা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। ফের অতিবৃষ্টিতে ফসলি জমি, পুকুর, ঘেরসহ বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। উপজেলার নিজামপুর গ্রামের ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় এখন দেড় সহস্রাধিক পরিবারের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে তিন গ্রামের স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া। গ্রামবাসী ও ছাত্রছাত্রীরা ইতোমধ্যে ভাঙ্গা বাঁধ ও রাস্তা মেরামতের দাবিতে মানববন্ধন করলেও বাঁধ সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। নিজমপুর গ্রামে কৃষক ইসাহাক হাওলাদার জানান, গত বছরে জমিতে ধান চাষাবাদ করতে পারিনি। এ বছর ও লবন পানিতে ক্ষেত-খামার তলিয়ে রয়েছে। একই গ্রামে ইলিয়াস জোমাদ্দার জানান, জোয়ার-ভাটায় পানি উড্ডা সব ডুব্বা থাহে। মোগো পোলাপানগুলায় স্কুলে যাইতে পারে। বান্ধের লইগ্যা চেয়ারম্যানেরও জানাছি। চম্পাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার জানান, দেবপুর ভেঙে যাওয়া বাঁধ এখন এলাকার মানুষের কাছে আতঙ্ক। গতবারও এই বাঁধ ভেঙে ছিল। এবার ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর তা-বে ফের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে হাজার হাজার একর জমিতে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বলতে গেলে ওইসব গ্রামের মানুষ এখন জোয়ার-ভাটার ফাঁদে পরেছে। একই কথা বললের ধানখালী ইউনিয়নের একাধিক ইউপি সদস্য। মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ছালাম আকন জানান, জরুরি ভিত্তিতে নিজামপুর পয়েন্টে ভাঙ্গা অংশ মেরামত করা না হলে আগামী কৃষি মৌসুমে কৃষকরা তাদের জমিতে চাষাবাদ করতে পারবে না। এ বিষয়ে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খাঁয়ের জানান, ভাঙ্গা বাঁধ মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছেন। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া ওইসব ভাঙ্গা বাঁধ স্পটগুলো ওয়াটার বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শন করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন