জিএম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে
আশাশুনি উপজেলায় স্কুল থাকলেও শিক্ষার্থী নেই, শিক্ষকদের দায়িত্ব নেই, তারপরও নিয়মিত বেতন তুলে নিচ্ছে সবাই। এমন আজব স্কুলের নাম ইউনিসেফের সহযোগিতায় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন পরিচালিত এবিএল স্কুল। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১২৫টি এবিএল স্কুল রয়েছে। এসব স্কুলে ১২৫ জন শিক্ষক আছেন। আছেন ১০ জন সুপার ভাইজার, ৩ জন এডুকেশন অফিসার ও একজন উপজেলা কো-অর্ডিনেটর। সবাই কাগজে- কলমে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। মাস শেষে উপজেলা কো-অর্ডিনেটর ৩৩ হাজার টাকা করে, ৩ জন এডুকেশন অফিসার ২৬ হাজার টাকা করে, ১২৫ জন শিক্ষক ৭ হাজার ২শ’ টাকা করে বেতন পাচ্ছেন। ১২৫টি স্কুলের ভাড়া দেয়া হচ্ছে ১০০০ টাকা করে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেরই একজনও ছাত্র নেই। কয়েকটিতে ১/২ জন ও কয়েকটিতে ৪/৫ জন করে ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ফলে অধিকাংশ স্কুল তালাবদ্ধ থাকে, কোনো কোনোটি খোলা থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থী নেই, কোনো কোনোটিতে ১/২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও হয় শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন না, নতুবা পাশের কোনো স্থানে বসে গল্পে মশগুল আছেন, নতুবা ঘুমিয়ে সময় পার করছেন, এমন দৃশ্য নিত্যদিনের। তবু স্কুল না চললেও বহাল তবিয়তে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বেতন তুলে হজম করে চলেছেন। শিক্ষার্থী নেই, শিক্ষকদের খবর নেই, কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানে না গিয়েও রিপোর্ট পাঠিয়ে দায়িত্ব শেষ করে নিয়মিতভাবে বেতন হজম করে যাচ্ছেন। অথচ তাদের নিয়ে কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই। স্কুলের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা উপজেলা কো-অর্ডিনেটর কামরুল ইসলাম জানান, এসব স্কুলে আগে শিক্ষক ছিল, কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় এসেছে, তাছাড়া এবছর আমাদের স্কুলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, তাই অনেক ছাত্রছাত্রীকে প্রাইমারিতে ভর্তি করা হয়েছে। শিক্ষার্থী না থাকলেও শিক্ষকরা স্কুলে গিয়ে নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এজন্য ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে তাদের বেতন দেয়া হচ্ছে। এব্যাপারে ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন