বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বড় ধরণের ধাক্কা আসছে যুবলীগের নেতৃত্ব পরিবর্তনে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:৫০ পিএম

সম্প্রতি দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে যুবলীগ। ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনটির ‘টপ টু বটম’ অনেক নেতা দুর্নীতি, অপকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার, কেউ কেউ এসব অপকর্মে মদদ দিয়ে আসছেন। আগামী সম্মেলনে এদের কারোরই নতুন কমিটিতে ঠাঁই হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভারত সফরে যাওয়ার আগে গত বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জরুরি ভিত্তিতে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তিনি আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে চার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন। দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত কেউ যেন আওয়ামী লীগে ঠাঁই না পায়, সে ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন তিনি।

এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের চার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনে নেতৃত্বের ব্যাপক পরিবর্তন আসতে চলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের ধাক্কা আসবে যুবলীগে।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের সম্মেলনে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে ঢেলে সাজানো হবে। নেতৃত্ব বেশ বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে সংগঠনটিতে। কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পরিবর্তন আসবে।
কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ চার সংগঠনের মধ্যে রয়েছে সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি তিন বছর পর পর সংগঠনগুলোর সম্মেলন হওয়ার কথা।

যুবলীগের সবশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১২ সালের ১৪ জুলাই। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন একই বছরের ১১ জুলাই ও কৃষক লীগের সম্মেলন হয় ১৯ জুলাই। জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন হয়েছে ২০১২ সালের ১৭ জুলাই।

ইতোমধ্যেই যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। তলব করা হয়েছে সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবও। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুমিনুল হক সাঈদ, দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানসহ অনেকেই চলে গেছেন আত্মগোপনে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা দাবিদার জি কে শামীম গ্রেফতার হয়েছেন।

যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ঢাকা মহানগর উত্তরের কমিটিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। ইতোমধ্যেই দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে। বেশ কিছুদিন হলো তিনি অন্তরালে রয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেফতারের পর সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। এছাড়া, সংগঠনের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের অনেক নেতাই আত্মগোপনে রয়েছেন। অভিযুক্তরা এবারের কমিটি থেকে ছিটকে পড়বেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগেও সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। এই সংগঠনটির নেতাদের কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যেই সংগঠনটির সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাউসারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রচারে এসেছে।

জাতীয় শ্রমিক লীগ ও কৃষক লীগের নেতৃত্বেও পরিবর্তন আসবে। এই সংগঠন দু’টির শীর্ষ পর্যায়ের পদগুলো থেকে বর্তমান কমিটির অনেকেই বাদ পড়বেন। সেখানে নতুন নেতৃত্বকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

সূত্র জানায়, যুবলীগের ৯ নভেম্বর, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১৬ নভেম্বর, কৃষক লীগের ২ নভেম্বর ও জাতীয় শ্রমিক লীগের ২৩ নভেম্বর সম্মেলন হতে পারে। তবে, সংগঠনগুলোর নেতারা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ থেকে এখনো নির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানানো হয়নি। তবে, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করতে আওয়ামী লীগ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা প্রস্তুত, এই সময়ের মধ্যেই সম্মেলন করবো। সম্মেলনে নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) প্রধান অতিথি করা হবে। তিনি কবে সময় দিতে পারবেন, তার সঙ্গে আলোচনা করেই তারিখ ঠিক করা হবে।

এদিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার ও সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ও কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন