দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের প্রধান ডাকঘরটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে কার্যক্রম। এতে এলাকার গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বগুড়া জেলার বৃহত্তর উপজেলার মধ্যে দুপচাঁচিয়া একটি উলেখযোগ্য। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে উপজেলাটি সুপ্রতিষ্ঠিত। একই সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থাও অত্যন্ত উন্নত। দেশের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সাথে গতিশীল রেখে উপজেলা প্রশাসনের কাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তনের সাথে দুপচাঁচিয়া পোস্ট অফিসটি কাঠামোগত ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। ১৯৮৫ সালে ডাক বিভাগের নিজস্ব অর্থায়নে উপজেলা সদরের পূর্বপারাস্থ পুরাতন মাটির ডাক ভবনটি ভেঙে পাকা এমারত তৈরি করা হয়। পোস্ট অফিসের প্রশাসনিক কাজে ফিরে আসে গতিশীল। প্রতি মাসে গড়ে প্রায় সাধারন সঞ্চয় ও মেয়াদী সঞ্চয় দেড় কোটি টাকা ও সঞ্চয়পত্র বিক্রয় প্রায় ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। বিপুল রাজস্ব আয়ের এই ডাক বিভাগটি সার্বিক উন্নয়নের মাঝেও বৃটিশ আমলের নিয়ম ও পদ্ধতিতে কার্যক্রম চলার ফলে গ্রাহকদের দুুুর্ভোগ পোহাতে হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের নির্মিত নতুন এই ভবনটির অবস্থাও করুন। ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় দেয়ালের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। ছাদের ও ছাদের ভিমের প্লাস্টার উঠে গিয়ে রডগুলো কঙ্কালের মত বের হয়ে পড়েছে। অফিস সংলগ্ন পোস্ট মাস্টারের বাসভবনটির অবস্থা একই। ইতোপূর্বে এই অফিসসহ বাস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও জরাজীর্ণ এই ভবনে পোস্ট অফিসে নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। ভবনটির ছাদের প্লাস্টার উঠে যাওয়ায় বৈদ্যুৎতিক ফ্যানগুলো খুলে রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গরমের তীব্রতার মাঝেও কর্তব্যরত পোস্ট মাস্টার ও কর্মচারীরা তাদের দায়িত্ব পালন করছে। পোস্ট অফিসটি গুরুত্বপূর্ণ লেনদেন এসবি সঞ্চয়পত্র ও এফডি যাতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আদান প্রদান হয়ে থাকে। এ ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির আওতায় ৬ মাসের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চালু রয়েছে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। আকাশের বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটার ও অন্যান্য জিনিসপত্র আকাশে মেঘ দেখলেই পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হচ্ছে। উপজেলার এই পোস্ট অফিসটি সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস। অথচ তা পড়ে রয়েছে অবহেলায়। ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি পাশাপাশি দিন দিন তাদের মাঝে ক্ষোভের দানা বাঁধছে। ডাকঘরটির পশ্চিম ও দক্ষিণ পার্শ্বে সীমানা প্রাচীর বহু পূর্বে ভেঙে পড়েছে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তার চরম অভাব রয়েছে।
এ ব্যাপারে পোস্ট মাস্টার আব্দুল হাকিম মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ভবনটি সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছেন। ইতোমধ্যে ডাক বিভাগের বগুড়া বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। জরুরি সংস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে সরেজমিনে স্কিম তৈরিও করেছেন। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলেই ভবনটি সংস্কার করা হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। বগুড়ার পোস্ট অফিসের ভবন শাখার পোস্টার অপারেটর জাহানুর ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, পোস্ট অফিসটির সংস্কারের জন্য প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছেন। অনুমোদন হলেই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত করে জরাজীর্ণ পোস্ট অফিসটি সংস্কার করা হবে। বিশ্ব ডাক দিবসের এই দিনে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জরাজীর্ণ এই পোস্ট অফিসটি দ্রুত সংস্কারের জন্য ডাক বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন