মৌলভীবাজার পৌরবাসির স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবায়ন হতে চলেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে (এলজিইডি) শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান খাল কোদালিছড়ার উভয় পাশে গাইডওয়াল ও ওয়াকওয়ের নকশা অনুমোদন হয়েছে।
এটা বাস্তবায়ন হলে একদিকে ছড়ার পাড় ভাঙনরোধ হবে, আগের মতো ভরাট হবে না, বাড়বে পানি প্রবাহ। পাশাপাশি দু’পারে পায়ে হাঁটার পথ শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। বাড়বে পর্যটন সম্ভাবনা।
মৌলভীবাজার পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রত্যাশিত এই সংবাদে উচ্ছসিত পৌর নাগরিক, পৌর পরিষদ, কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা। এ উপলক্ষে পৌরসভা মসজিদে শোকরানা মিলাদ মাহফিলও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পৌর মেয়র মো. মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) কোদালিছড়ার নকশা অনুমোদন করেছে। এখন প্রাক্কলিত ব্যয় উল্লেখ করে পাঠানো হবে। সেটা অনুমোদন হওয়ার পরই যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে দরপত্র আহ্বান ও কাজ শুরু হবে। আশা করা হচ্ছে এ বছরের শেষ দিকে কাজ শুরু করা যাবে। শহরেরর টিবি হাসপাতাল এলাকা থেকে কুদালিপুল পর্যন্ত ২৬০০ মিটার ডিজাইন করা হয়েছে।
মেয়র আরো বলেন, ‘এটা পৌরবাসির দীর্ঘ আকাংখার প্রতিফলন। এজন্য অনেক পরিশ্রম ও সাধনা করতে হয়েছে। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। এতে অনেকেরই অবদান আছে। অনেকেই ফেসবুকে লেখালেখি করে বিষয়টি সামনে এনেছেন, অনেকে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন।
সংসদ সদস্য মহোদয়গণ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ক্রিকেটার, ফুটবলার, ক্রীড়া সংগঠক, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসকসহ সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী খলিলুর রহমানকে। যিনি নিজে মৌলভীবাজারে এসে কোদালিছড়া পরিদর্শন করে নকশা অনুমোদন করেছেন।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার বিজনেস ফোরামের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম কামরান বলেন, ‘মেয়র ফজলুর রহমানের অদম্য ইচ্ছায় এই কাজটি সম্ভব হয়েছে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে এটা অনেক বড় উদ্যোগ। বিগত ৫০ বছরে যে কাজ হয়নি, সেই ‘অসম্ভব’ কাজ সম্ভব হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মেয়র মহোদয়কে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
গড়ব স্বপ্নের শহরের অন্যতম উদ্যোক্তা ডোরা প্রেন্টিস বলেন, ‘কোদালিছড়ায় গাইডওয়াল হবে। ফুলে ফুলে সু-শোভিত পায়ে হাঁটা পথ দিয়ে মানুষ চলাচল করবে। ছড়ায় চলবে নৌকা। শহরবাসি হিসেবে এটা ছিলো স্বপ্নের মতো একটা চাওয়া। আজ সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে চলেছে, ভাবতেই ভালো লাগছে আমার। দিনরাত, সকাল-দুপুর, ঝড়-বৃষ্টি উপক্ষো করে মেয়র নাগরিকেদর সেই অসম্ভব এক চাওয়াকে বাস্তব রূপ দিচ্ছেন। এমন একটা উদ্যোগ দেশে-বিদেশে সমাদৃত হবে বলে আমার মনে হয়। এ মত দিয়েছেন শহরের বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজন।
প্রসঙ্গত, মৌলভীবাজার শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান পথ হচ্ছে কোদালিছড়া। দিনদিন ভরাট ও সংকুচিত হয়ে পানি প্রবাহ কমে আসছিলো। এ অবস্থায় মেয়র ফজলুর রহমানের উদ্যোগে ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি শহরবাসির অংশগ্রহণে স্বেচ্ছাশ্রমে কোদালিছড়া খনন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামে শহরের হাজারো মানুষ। এতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, রাজনীতিবিদসহ সকল সংগঠন ও সংস্থা এগিয়ে আসে। তৈরি হয় নতুন এক উদাহরণ।
পরে পৌরসভার উদ্যোগে এক্সোভেটর দিয়ে কোদালিছড়া খনন করা হয়। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের বাইরের অংশ খনন করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন