পানি সরবরাহ ১০দিন ধরে বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে হাসপাতালে আসা রোগীরা। যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা পড়েছেন বেশি বেকায়দায়। এতে পানির অভাবে হাসপাতালে দুর্গন্ধে পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনী আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন। সরেজমিনে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পানির অভাবে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার কর্মরত চিকিৎসকরা। হাসপাতালের বাইরের টেউবওয়েল থেকে বালতি করে পানি এনে জরুরি বিভাগ চালাচ্ছে তারা। যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা পানির অভাবে টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন না। তারা বাইরে থেকে বালতিযোগে পানি এনে টয়লেট ব্যবহার করছে। এতে টয়লেটের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সপ্তাহ পাড় হলেও বন্ধ হয়ে যাওয়া পানি সরবরাহ করতে পারছে না জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর। ফলে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা।
জানা যায়, চলতি মাসের ১০ অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে পানি সরবরাহের পাম্পটি বিকল হয়ে যায়। এতে পুরো হাসপাতাল জুড়ে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার ১০দিন অতিবাহিত হলেও বিকল পাম্পটি চালু করতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর। ফলে হাসপাতালে ভর্তি রোগী, আবাসিক ডাক্তার, নার্সসহ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে টয়লেট ও গোসলখানা ব্যবহার করতে পারছে না রোগীরা। ডায়রিয়া রোগীদের জামা-কাপড় অন্য জায়গা থেকে পরিস্কার করে আনতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় ভর্তি গরীব রোগীরাও চিকিৎসা নিতে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ৫০ শয্যার এই হাসপাতাল এখন প্রায় রোগী শূণ্য হয়ে পড়েছে।
চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার নিকলা দড়িপাড়া গ্রামের কল্পনা বেগম বলেন, তিনদিন হয়ে গেল আমার মা টাইফয়েড জ্বরের কারনে হাসপাতালে ভর্তি। টয়লেটে পানি না থাকায় খুবই অসুবিধা হচ্ছে। গরীব মানুষ অন্য কোন ক্লিনিক বা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব না। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা অন্যত্র চিকিৎসার জন্য চলে গেছে। হাসপাতালে কর্মরত নার্স জানান, পানি সরবরাহ না থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। হাসপাতাল জুড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে গেছে। রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জুনিয়র মেকানিক খোরশেদ আলম বলেন, হঠাৎ করে পাইপে আয়রন জমে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহীউদ্দিন আহম্মেদ জানান, হটাৎ করেই পাম্পটির ত্রুটি দেখা দেয়ায় বন্ধ আছে পানি সরবরাহ। জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে অবহিত করার পর সহকারি প্রকৌশলী পাম্প দেখে গেছেন। আশা করছি অতিদ্রæত পাম্পটি মেরামত করে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন