দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ রাস্তাগুলো বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে চলতি বর্ষায় রাস্তার ইট ওঠে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ এসব এলাকা দিয়ে চলাচলরত সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা শহর থেকে বেতদিঘী ইউনিয়নের মাদিলাহাট বাজার চিন্তামন হয়ে আটপুকুর, পুকুরীহাট ও খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ী বাজার যাওয়ার রাস্তাগুলোর বেশীরভাগ জায়গায় গর্ত তৈরি হবার কারণে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন উপজেলা শহরে যাতায়াত করা হাজারও মানুষ ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। এমন চিত্র শুধু যে গ্রামীণ রাস্তায় তা নয় উপজেলা সদরের প্রায় রাস্তায় একই চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর-খয়েরবাড়ী রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে কোন সংস্কার না করায় রাস্তার দু’পাশ ভেঙে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে গেছে, বর্ষার কারণে রাস্তার মাঝখানগুলোতে তৈরি হয়েছে বড়বড় গর্ত। গর্তের কারণে ছোট-ছোট অটোবাইক, টেম্পুতে করে চলাচলরত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। একই চিত্র উপজেলা শহর থেকে চিন্তামন হয়ে মাদিলাহাট বাজার, বঙ্গবন্ধু কলেজ হয়ে আটপুকুর, পুকুরীহাট যাওয়ার বেশীরভাগ রাস্তার। ফুলবাড়ী উপজেলার বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠান এসব এলাকায় গড়ে উঠলেও চলাচলের অনুপোযোগী এসব রাস্তা সংস্কারের কোন উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। এসব এলাকায় চলাচলরত মানুষের দাবি দীর্ঘদিন এভাবে পড়ে থাকলেও সংস্কারের উদ্যোগ তো দূরের কথা খোঁজও নেয়নি উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। তবে এলাকার চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধরণা দিয়েও কোন কাজ না হওয়ায় চলাচলের অযোগ্য কৃষ্ণপুর থেকে খয়েরবাড়ী বাজারে যাওয়ার রাস্তাটিতে মাটি দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে গর্ত পূরণের কাজ করেছেন খয়েরবাড়ী বাজার বয়েজ ক্লাবের কিছু স্বেচ্ছাসেবী যুবক। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সে মাটিও ধুয়ে গেছে, ফলে ভোগান্তির শেষ হচ্ছেনা গ্রামীণ রাস্তায় চলাচলরত মানুষের।
খয়েরবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহেরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, শিউলি ট্রেডাস নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২ বছর আগে টেন্ডারের মাধ্যমে লালপুর এবং খয়েরবাড়ী বাজারের সড়কের কাজ পেলেও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে সড়কের কাজ সম্পন্ন না করেই চলে যান। যার ফলে এলাকার মানুষকে এই দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। তবে উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুজ্জামানের সাথে কথা হয়েছে, তিনি খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাগুলো অনেকদিন ধরে এমন বেহাল দশায় পড়ে থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা উপজেলার কোনো কর্মকর্তা খোঁজ নেয়নি। বারবার মৌখিক ও লিখিত আবেদন করলেও কোনো কাজ হয়নি। আমরা শুনেছি ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজে রাস্তায় মাটি ফেলা হয়। কর্মসূচির প্রকল্পের মাধ্যমেও যদি এই রাস্তাগুলোতে মাটি ফেলা হত তাহলে মানুষের ভোগান্তি হয়তো কম হত। এসব রাস্তায় এখন যানবাহন তো দূরের কথা মানুষই হাটতে পারে না। খয়েরবাড়ী ইউপির মুক্তার পুর গ্রামের আজাহার আলী বলেন, ট্রলি চলাচলের কারনেই রাস্তাগুলোর এই বেহালদশা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শাহিদুজ্জামান জানান, আমবাড়ী হয়ে আটপুকুর, চিন্তামন, মাদিলাহাট পর্যন্ত এবং ফুলবাড়ী থেকে খয়েরবাড়ী বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের প্রস্তাবনা অনেক আগেই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগির এই রাস্তাগুলোর সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন