বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন

প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে

নির্ধারিত সময়ের আগেই চলতি অর্থ-বছরের (২০১৫-১৬) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর। ইতোমধ্যে ভোমরা বন্দর থেকে ছয়শ’ চার কোটি ১৭ লক্ষ ১১ হাজার ৩৬২ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। যেখানে চলতি অর্থ-বছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয়শ’ কোটি টাকা। ভোমরা স্থল বন্দরের শুল্ক বিভাগ জানিয়েছে, ছয়শ’ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরের কার্যক্রম শুরু করেছিল ভোমরা বন্দর। যা অর্থ-বছর শেষ হওয়ার ১৬ দিন আগেই অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।  সূত্র মতে, ভোমরা বন্দর থেকে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ২৬ কোটি ৭৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮১১ টাকা, আগস্ট মাসে ৩৬ কোটি ৯ লাখ ১৩ হাজার ২৯০ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৫৩ কোটি ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৩২ টাকা, অক্টোবর মাসে ৫৯ কোটি ২৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪১টাকা, নভেম্বর মাসে ৩৬ কোটি ৩৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬ টাকা, ডিসেম্বর মাসে ৫৬ কোটি ৬৮ লাখ ১১ হাজার ১১৯ টাকা, ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ৫৯ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৯৩ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৭০ কোটি ৮৯ লাখ ৩৬ হাজার ৯৪৭ টাকা, মার্চ মাসে ৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯৩ টাকা, এপ্রিল মাসে ৬৬ কোটি ৩১ লাখ ৬৩ হাজার ৩২৮ টাকা, মে মাসে ৩৫ কোটি ৮৪ লাখ ৩২ হাজার ১১ টাকা ও চলতি জুন মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৪০ হাজার ৭৩১ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হওয়া সত্ত্বেও সবধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ না থাকায় ভোমরা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বন্দর সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ স ম আলাউদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৯৬ সালে ভোমরা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর ২০১৫ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ভোমরা বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে ঘোষণা দেন। এরপর দুইটি ওয়্যারহাউজ, ওয়েব এক্সেল, ওয়াচ টাওয়ার ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণসহ নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। তবে, পূর্ণাঙ্গ বন্দর ঘোষণার এক বছর অতিবাহিত হলেও পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা।  ভোমরা স্থল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ভোমরা বন্দর দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী বন্দর। অথচ সবধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ না থাকায় এ বন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ভোমরা বন্দর দিয়ে ৫৮টি পণ্য আমদানির অনুমোদন থাকলেও এনবিআর স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কিপিং লাইসেন্স একটি স্ট্যাডিং অর্ডারের মাধ্যমে আটকে রেখেছে। তাই মাত্র ২১/২২টি পণ্য আমদানি করা যায়। অথচ এই বন্দর থেকেই সরকারের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় হওয়ার কথা। তিনি বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা বন্দরের দূরত্ব সবচেয়ে কম। মাত্র ৭৫ কিলোমিটার। অথচ দেশের প্রধান স্থল বন্দর বেনাপোলের দূরত্ব ১১৮ কিলোমিটার, সোনামসজিদ বন্দরের দূরত্ব ৩২২ কিলোমিটার ও হিলি বন্দরের দূরত্ব ৩১৮ কিলোমিটার। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে লাভের জন্য। তাই ভোমরা বন্দরের দূরত্ব কম হওয়ায় পরিবহন খরচ কম হয়। কিন্তু সব পণ্য আমদানি করা যায় না বলে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরে যেতে বাধ্য হয়। আর পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে ভোমরা বন্দরের সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাবে। তাই ভোমরা বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যেসব জটিলতা রয়েছে সেগুলো নিরসনের সময় এখনই-বলে মন্তব্য করেন তিনি। ভোমরা বন্দর শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার সানোয়ারুল কবীর জানান, ভোমরা বন্দর রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সম্ভাবনাময়ী। ইতোমধ্যে চলতি অর্থ-বছরের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। অর্থ-বছর শেষ হতে এখনো বেশ কিছু দিন বাকি। তাই উদ্বৃত্তের পরিমাণ আরো বাড়বে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন