রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভায়েলা-হাটাব সড়কের মিয়াবাড়ী এলাকায় অবস্থিত প্রায় ১শ বছরের পুরনো ব্রিজটি ভেঙে রড লুট করার অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। প্রায় এক মাস আগে ব্রিজটি ভেঙে ফেলা হলেও এখন পর্যন্ত পুনরায় ব্রিজ নির্মাণের কোনো খবর নেই। ব্রিজ ভেঙে ফেলায় ভায়েলা-হাটাব সড়কে গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে প্রায় ১২ গ্রামের লোকের চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পাচ্ছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১২ গ্রামের লোকের চলাচলের একমাত্র সড়ক ভায়েলা-হাটাব সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ গ্রামের কয়েক হাজার লোক চলাচল করতে হয় ভায়েলা-হাটাব সড়ক দিয়ে। গত এক মাস আগে ইমতিয়াজ এন্টারপ্রাইজের মালিক হাবিব মোল্লাসহ তাদের লোকজন ১শ’ বছরের পুরনো ব্রিজটি ভেঙে ফেলেন। এছাড়া ভেঙে ফেলা ব্রিজটি থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকার রড লুট করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ব্রিজ ভেঙে ফেলার আগে বা পরে বিকল্প চলাচলের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এতে করে হাটাব, মাছুমাবাদ, ভায়েলা, মিয়াবাড়ী, আতলাশপুর, জাঙ্গীর, হা-িমার্কেট, টেকপাড়া, বাড়ৈপারসহ ১২ গ্রামের লোকজনের চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। বিকল্প রাস্তা হিসেবে স্থানীয় এলাকাবাসী পায়ে হেঁটে বাশের সাঁকো ব্যবহার করতে হচ্ছে। বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে লোকজন। এছাড়া বিকল্প রাস্তা হিসেবে হাটাব-মুড়াপাড়া সড়ক হয়ে মুড়াপাড়া-ভুলতা সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে করে প্রতিজনে ১৫ টাকা ভাড়ার স্থলে ৫০ থেকে ১০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। ব্যয় হচ্ছে সময়। এলাকাবাসী জানান, ঠিকাদার হাবিব মোল্লা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পাচ্ছে না। কেউ প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারদের ভাড়াটে লোকজন দিয়ে প্রতিবাদীদের হুমকি-ধামকি দেয়া হয়ে থাকে। দীর্ঘ একমাস আগে ব্রিজটি ভেঙে ফেলা হলেও নতুন ব্রিজ নির্মাণের এখন পর্যন্ত কোনো খবর নেই। তবে, রড লুট করার উদ্দেশেই ব্রিজ ভেঙে ফেলেন ঠিকাদার হাবিব মোল্লা। কবে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে তাও স্থানীয় বাসিন্দারা জানেন না। হয়রানি ও অধিক ভাড়া দিয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। অভিযোগ রয়েছে, শুক্রবার সকালে ভেঙে ফেলা ব্রিজের ছবি তুলতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে যান স্থানীয় সাংবাদিকরা। এসময় ঠিকাদার হাবিব মোল্লার নিয়োজিত ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের ছবি তুলতে নিষেধ করেন এবং হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তা নির্মাণেও অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে হাবিব মোল্লার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ঠিকাদার হাবিব মোল্লা বলেন, ব্রিজ ভেঙে রড লুটের অভিযোগটি সঠিক নয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের অনুমতি নিয়েই ব্রিজটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আওলাদ হোসেন বলেন, ভুলতা ইউপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আরিফুল হক ভুইয়ার তত্ত্ব¡াবধানে ব্রিজটি ভাঙানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পুরনো ব্রিজ ভেঙে সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে ভুলতা ইউপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আরিফুল হক ভুইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন