মাধবপুর (হবিগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনটি চালু হওয়ার ১১১ বছর পরও যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হয়নি। ফলে শত শত যাত্রীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে এ স্টেশন থেকে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, মাস্টার না থাকাতে স্টেশন ঘরটি তালা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। স্টেশনে নেই কোনো বিশ্রামাগার ও শৌচাগারের ব্যবস্থা। যদিও স্টেশন থেকে ১০ গজ উত্তর দিকে ঢাকা চাঁদনী চক মার্কেটের সাবেক সভাপতি ও তেলিয়াপাড়া স্টেশন বাজারের দেওয়ান আব্দুল মোতালিব (মতিন)-এর নিজস্ব অর্থায়নে একটি শৌচাগার তৈরি করলেও অযতœ অবহেলায় এই শৌচাগারটি তালা অবস্থায় রয়েছে। এই স্টেশন দিয়ে ২৭টি গ্রাম ও তেলিয়াপাড়া, সুরমা চা বাগানের যাত্রীরা যাতায়াত করেন। মো. রাসেল নামে এক যাত্রী জানান, স্টেশনটিতে যাত্রীদের জন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই, ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর। এমনকি এই স্টেশনটিতে একজন বুকিং মাস্টারও নেই। অপর যাত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নাহিন আক্তার জানান, এটা কেমন স্টেশন, মহিলাদের জন্য কোনো শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নেই। তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনটি নামেই শুধু রেলস্টেশন কাজে নেই। তেলিয়াপাড়া স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ২০১১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামূল হক মোস্তফা শহীদ তেলিয়াপাড়া স্টেশন বাজারে এক মহাসমাবেশে এলাকার জনতার উদ্দেশে বলেছিলেন, অচিরেই তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনটি বি.ক্লাসে রূপান্তর করা হবে। কিন্তু আজও রেলস্টেশনটি বি.ক্লাসে রূপান্তর হয়নি। তেলিয়াপাড়া স্টেশন বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, মাননীয় রেলমন্ত্রী মুজিবুর হকের সুদৃষ্টি পড়লে এ স্টেশনটি বি.ক্লাসে রূপান্তর করা সম্ভব। উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. তৌফিকুল আলম চৌধুরী জানান, ১৯৭১ সালে তেলিয়াপাড়ার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এখান থেকে মুক্তিবাহিনীর বড় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানটিকে দর্শনার্থীদের জন্য আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে রেলস্টেশনটি বি.ক্লাসে রূপান্তর করা জরুরি। তাছাড়া তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। এখানে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, বি.বাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত পর্যটকদের এই জাতীয় উদ্যানে সমাগম ঘটে। বর্তমানে স্টেশনটিতে কুশিয়ারা ও বাল্লা লোকাল ট্রেন যাতায়াত করে। জানা যায়, স্টেশনটি বি.শ্রেণীর মালামাল বুকিং-এর জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। আখাউড়া-শায়েস্তাগঞ্জের জংশনের মধ্যবর্তী স্থানে তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনটি। তার দু’পাশে দুটি চা বাগান, ১টি উচ্চবিদ্যালয়, ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি মাদ্রাসা ও ১টি কৃষি ব্যাংক রয়েছে। হবিগঞ্জ-৪, মাধবপুর-চুনারুঘাট আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর নিকট এলাকাবাসীর জরুরী ভিত্তিতে তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনটি পুনঃসংস্কার ও বি.ক্লাসে উন্নীত করার জোর দাবি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন