মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া উপজেলায় মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দর্জির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। সেই সাথে দর্জিরা মহাব্যস্ত সময় পার করছে, কাটছে তাদের নির্ঘুম রাত। বগুড়ার পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক এলাকা হিসাবে দুপচাঁচিয়া উপজেলার পরিচিতি বিস্তৃত। যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যান্ত ভালো হওয়ায় জেলা শহরের সাথে পাল্লাদিয়ে এই উপজেলায় বেশকিছু নামি-দামি টেইলার্স প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা সদরে সিও অফিস এলাকা, বন্দর তে-মাথা, শহরতলা, পুরাতন বাজার, থানা বাসস্ট্যান্ড, মেইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উল্লেখযোগ্য লিড টেইলার্স, সেঞ্চুরি টেইলার্স, মোমিন টেইলার্স, সানমুন টেইলার্স, লড টেইলার্স, প্যারিস টেইলার্স, রিক্তা টেইলার্স, রফিক টেইলার্স, এম রহমান টেইলার্স, মুন টেইলার্স, সিটিহার্ট টেইলার্সসহ প্রায় শতাধিক টেইলার্স গড়ে উঠেছে। এবার রোজার শুরু থেকেই উপজেলার টেইলার্সগুলোতে ছেলেদের শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা আর মেয়েদের থ্রি-পিস, ব্লাউজ পেটিকুট, বোরকা তৈরির অর্ডার আসতে থাকে। রোজা যত বাড়ছে টেইলার্সের দোকানগুলোতে অর্ডারের চাপও বাড়ছে। টেইলার্সের মালিকরা কাপড় বেচাকেনার অর্ডার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার টেইলার্স মালিকরা সেলাই মজুরি বৃদ্ধি করেছে। এব্যাপারে লিড টেইলার্সের মালিক মনছুর আলী, মোমিন টেইলার্স অ্যান্ড ক্লথ স্টোরের মালিক মিজানুর রহমান মিজান জানান, কারিগরদের (দর্জির) মজুরি, দোকান ভাড়া, সুতার দাম বৃদ্ধিসহ বিদ্যুৎ ও জেনারেটারে জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় মজুরি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্যান্ট ৪০০ থেকে ৪৩০ টাকা, পাঞ্জাবি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শার্ট ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, মেয়েদের লাসা সেট ৫০০ টাকা, কামিজ ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, ব্লাউজ ১০০ টাকা, পেটিকুট ৭০ টাকা, বোরখা ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, থ্রি-পিস ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পায়জামা ১০০ থেকে ১২০ টাকা মজুরি নেয়া হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার টেইলার্সের কাটিং মাস্টাররা গলায় ফিতা ঝুলিয়ে কাঁচি হাতে কাপড় কাটছে তো কাটছেই। যেন দম ফেলারও সময় নেই। আর পেছনে দর্জিরা পোশাক সেলাইয়ে মহাব্যস্ত। সহস্রাধিক কারিগর (দর্জি) সেহরির খাওয়ার পর থেকে কাপড় সেলাই করছে তো করছেই। তাদের মেশিনের খট খট শব্দে এলাকা মুখরিত হয়ে থাকছে। এব্যাপারে কাটার মাস্টার আব্দুল মান্নান, লুৎফর রহমান ও কারিগর আব্দুল জলিল, মানিক মিয়া, আবুল হোসেন জানান, সারা বছর খুব একটা কাজকাম হয় না। এই রমজান মাসেই একটু কাজ হয়। অনেক কারিগরই এই রমজান মাসের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আর তাই কিছু টাকা বেশি আয় করতেই একটু বেশি পরিশ্রম করছেন। যত পরিশ্রম করবে ততো আয় হবে এই আশায় অনেক কারিগরই অর্ডার নেয়া কাপড়গুলো নির্ধারিত সময়ে টেইলার্স মালিকের কাছে সরবরাহ করতে নির্ঘুম রাতও পার করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন