যশোর ব্যুরো
মালয়েশিয়ায় মানব পাচারকারীদের হাতে নির্যাতিত যশোরের যুবক আব্দুর রাজ্জাক অবশেষে মৃত্যুও কোলে ঢলে পড়ে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। যশোর কুইন্স হাসপাতাল থেকে নিয়ে গত শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছিল। আব্দুর রাজ্জাক (১৮) যশোরের চৌগাছা উপজেলার দশপাকিয়া গ্রামের জাকির হোসেন গাজীর ছেলে। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য শনিবার সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় আটক রেখে মানব পাচারকারীরা আব্দুর রাজ্জাকের বাবার কাছ থেকে প্রায় সাত লাখ টাকার মুক্তিপণ আদায় করে নেয়। এরপর রক্ষা পান তিনি। ছাড়া পাওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরে ৮ জুন আব্দুর রাজ্জাক যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। ১৫ জুন তাকে যশোরের বেসরকারি হাসপাতাল কুইন্সে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম জহিরুল হক চৌধুরী আব্দুর রাজ্জাককে চিকিৎসা করছিলেন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তিনিও রাজ্জাককে ঢাকায় রেফার করেন। জাকির হোসেন গাজী জানিয়েছেন, গত ৭ জুন রাতে মালয়েশিয়া থেকে রাজ্জাককে বিমানযোগে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকায় আনা হয়। এরপর ৮ জুন দুপুর পৌনে দুইটার দিকে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল। আব্দুর রাজ্জাক চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায় আটক রেখে মানব পাচারকারীদের টাকা আদায়ের লোমহর্ষক কাহিনী। তিনি জানিয়েছিলেন, দশপাকিয়া গ্রামের একটি চক্র এখন মালয়েশিয়ায় গিয়ে মানবপাচার ব্যবসা শুরু করেছে। এ চক্রটি তিন বছর আগে তাকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নির্যাতন করে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু নির্যাতন থামেনি। একপর্যায়ে তিনি গুরুতর অবস্থায় দেশে ফিরে আসেন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন