কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মেঘনা নদীর ১নং সাতমারা চরেরগাও, ২ নং ভাষানিয়া দড়িচর, ৬ নং সেনেরচর ও চালিভাঙা মৌজার অভ্যন্তরে বালু উত্তোলন না করার জন্য মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সত্তে¡ও স্থানীয় কয়েকটি প্রভাবশালী ‘বালুদস্যু সিন্ডিকেট’ স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আর্থিক রফার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অনেক অভিযোগ উঠেছে। ফলে রামপ্রসাদেরচর, মহিশারচর, নলচর, ফরাজিকান্দি, সোনাকান্দা, চালিভাঙাসহ ১০টি গ্রামের মানুষ নদী ভাঙনের আতঙ্কে দিনযাপন করছে। মেঘনার ভাঙনে বসতভিটে হারিয়ে বহু পরিবার নিঃস্ব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে উক্ত গ্রামের শত শত পরিবার নদী ভাঙনের যন্ত্রনা সইতে হচ্ছে। ফলে নদী ভাঙন থেকে রক্ষার্থে বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজন দফায় দফায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন-নিবেদন করে আসছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নদী ভাঙন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কয়েকবার বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ জারি করলেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন চলেছে। বালুদস্যু সিন্ডেকেটের একটির নেতৃত্বে জনৈক ওয়াশীম অপরটির নেতৃত্বে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আ. লতিফ সরকার। উক্ত চেয়ারম্যান ট্রলারচালক আমির হোসেন হত্যাকান্ডের চার্জশিট র্ভূক্ত আসামি। সরেজমিন নদী ভাঙন কবলিত কয়েকটি গ্রামের গেলে এসব তথ্য চিত্র ফুটে উঠে।
এলাকাবাসী জানায়, রামপ্রসাদচর গ্রামের হোসাইন মোহাম্মদ মহসীন ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল নদী ভাঙনের কবল থেকে উক্ত গ্রামগুলোকে রক্ষা করতে হাইকোর্টে রিটপিটিশন করেন। পরে ওই মাসের ১১ এপ্রিল এক শোনানীতে মাননীয় হাইকোর্ট বালু উত্তোলন না করার জন্য সরকারকে ও স্থানীয় প্রশসনকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু ওই বালুদস্যু সিন্ডিকেট হাইকোর্টের নির্দেশের তোয়াক্কা না করে বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া শত শত পরিবার উপায়ন্তর না দেখে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আবারও হোসাইন মোহাম্মদ মহসীন হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। মাননীয় হাইকোর্ট গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২টি ইজারা বাতিলসহ আশপাশের এলকায় বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু এ নির্দেশনা পাওয়ার পর বালুদস্যুরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং ভিন্ন কৌশলে রাতের অন্ধকারে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখে। বালুদস্যু সিন্ডিকেট এতোই ভয়ঙ্কর যে, সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মুখে তাড়া খেয়ে পালিয়ে আসতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেঘনা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক রতন সিকদার বলেন, বালু সিন্ডিকেটের দল সরকারের আদেশ-নির্দেশকে তোয়াক্কা করছে না। তারা রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছে আর স্থানীয় প্রশাসন নিরব।
রিট আবেদনকারী মোহাম্মদ মহসীন বলেন, বালুদস্যুরা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ মানছে না, বালু উত্তেলনের ফলে এই অঞ্চলের শত শত পরিবার নদী ভাঙন আতঙ্কে দিনযাপন করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন