পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আমনের ক্ষেতে পোকার আক্রমণে কৃষকদের দুশ্চিন্তা ও উৎকন্ঠা বেড়েছে। স্থানীয় বাজার থেকে অনুমান নির্ভর কীটনাশক এনে তা ক্ষেতে প্রয়োগ করছেন কোন কোন কৃষক।
এই অঞ্চলে পোকা দমনের ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের তেমন কোন তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ এই অঞ্চলের কৃষকদের।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বাউফল উপজেলায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছর ৩৬ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) এবং ১৯ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে গড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন।
স্থানীয় একাধিক কৃষক বলেন, কয়েক বছর আগে পটুয়াখালীসহ উপক‚লীয় কয়েকটি জেলায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে আমন ধানের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। কৃষকরা এখন পর্যান্ত সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
চলতি বছর বাউফল উপজেলার আমন ক্ষেতে মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন তৃনমূল কৃষক।
দাশপাড়া ইউপির মো. জাহাঙ্গীর আলম নামের এক কৃষক বলেন, ‘পাতা মোড়ানো পোকায় আক্রমণ করার পর থেকে আমন ক্ষেত ধূসর বর্ণ হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এখন পর্যন্ত কোন কর্মকর্তা মাঠে আসেননি।’
একই গ্রামের কৃষক দুলাল হাওলাদার ও আবুল হাওলাদার বলেন, ‘কখনও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠে আসেন না। আমরা স্থানীয় বাজার থেকে কীটনাশক এনে তা ক্ষেতে প্রয়োগ করেছি।’
বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ভরিপাশা গ্রামের কৃষক চান্দু চৌকিদার বলেন, ‘তার ক্ষেতে পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। কৃষি বিভাগের কোন কর্মকর্তাই তার গ্রামে গিয়ে খোঁজ খবর নেন না।’
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আমির আলী বলেন, ‘বাউফল উপজেলার সিংহভাগ আমন ধানের উৎপাদন হয় তার ইউনিয়ন থেকে। চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং পানির অভাবে পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় লালচে রং ধারণ করেছে আমন ধানের ক্ষেত।
তেঁতুলিয়া পাড়ি দিয়ে কখনও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এই দ্বীপ ইউনিয়নে পা রাখেন না। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের চেনেন না এখানকার কৃষকরা। এছাড়াও ইঁদুরের আক্রমণ তো রয়েছেই। কি করলে কি হবে সেই ধারণাও নেই এই অঞ্চলের কৃষকদের। প্রতি বছর পোকা ও ইদুরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চন্দ্রদ্বীপের কৃষকরা দোয়া-মিলাদের আয়োজন করেন। বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে না এমন ছায়াঘেরা জমিতে পোকার কিছুটা উপদ্রব আছে। তবে তা স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ডালপোতা কর্মসূচিসহ কৃষকদের সচেতন করার কাজ চলছে। সহনীয় পর্যায়ে থাকায় আতংকিত হওয়ার কোন কারণ দেখছি না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন