রেবা রহমান, যশোর থেকে
যশোর অঞ্চলে ঈদের মার্কেট এখন জমজমাট। যার যা সাধ্য আছে সে অনুযায়ী খুশির ঈদ উপলক্ষে পরিবারের চাহিদা পূরণ করছে। ঈদের কেনাকাটা চলছে দিনরাত সমানতালে। দোকানিরা বলছেন, রমজানের তৃতীয় দিন থেকে বাজারে ক্রেতাসাধারণকে আসতে শুরু হয়। যদিও মূল বেচাকেনা হয় শেষের দিকেই। ঝিকরগাছার এক ব্যবসায়ী স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন যশোর এইচএমএম রোডে। কথা হয় তাদের সঙ্গে। বললেন, কেনাকাটা তো করতেই হবে। তাই আগেভাগেই করা ভালো। সাধ আছে সাধ্য নেইÑ ঈদের ক্ষেত্রে তা যেন প্রযোজ্য নয়। যেভাবেই হোক পরিবার-পরিজনের জন্য নতুন জামা-কাপড় ও জিনিসপত্র কেনার ব্যাপারে কার্পণ্য করা ঠিক হবে না। তাই ছুটে এসেছি। একই ধরনের কথা বললেন, কাপুড়িয়া পট্টি মনসা বস্ত্রালয়ে চৌগাছার এক কলেজ শিক্ষক। তিনি বললেন, যাকাতের কাপড় কেনা ও বিলি করতে সময় লাগবে, তাছাড়া পরিবারের পছন্দসই কাপড় জুতা স্যান্ডেল কিনতে তো সময় লাগবে তাই সময় হাতে নিয়ে বাজারে নেমেছি। দোকানিদের কথা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২৬ জুন দেয়ার ঘোষণায় খুব খোশ মেজাজে আছেন তারা। তাদের ভাবনা মূলত ২৬ তারিখ থেকে বেচাকেনা উঠবে তুঙ্গে। এখনই উপচেপড়া ভিড় হচ্ছে মার্কেটে। শুধু যশোর নয়, বরাবরের মতো যশোরাঞ্চলের সবখানে ঈদ মার্কেটে উপচেপড়া ভিড় হচ্ছে। তবে লক্ষ্য করা গেছে, বাহারি ও নামিদামি জিনিসপত্র ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা হচ্ছে তুলনামূলকভাবে কম। যে যার সাধ্যমতো জিনিস কিনছেন বেশ হিসাব-নিকাশ করে। যাকাতের জন্য শেষসময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন গরিব, দুস্থ ও অভাবী লোকজন। যারা প্রতিবছরই একাধিক লোকের কাছ থেকে পবিত্র ঈদুল ফেতরে যাকাতের কাপড়-চোপড় পেয়ে থাকে। রমজানের মাঝামাঝি থেকে পাড়া ও মহল্লায় দানশীল অর্থবিত্তশালী লোকদের বাড়ি বাড়ি যাকাত নেয়ার জন্য ভিড় লাগবে। যশোরের মনষা বস্ত্রালয়, রং ফ্যাশন, শাড়ি ঘর, জেস টাওয়ার, তাঁত কুটির, বিদিশা, লিবার্টি স্যু, লেডিস কর্নারসহ বিভিন্ন অভিজাত বিপণিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের কেনাকাটা হচ্ছে পুরোদমে। লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে, অভিজাত বিপণিতে বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে কম। বেশি বিক্রি হচ্ছে সাধারণ ঈদ মার্কেটে। যশোরে গরিবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত কালেক্টরেট মার্কেটে ভিড় বেশি। এক ব্যবসায়ী বললেন, এবার শিশু ও কিশোরদের পাঞ্জাবি, জুতা, স্যান্ডেল ও টি শার্ট এবং থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে বেশি। বড়দের জিনিসপত্রও বিক্রি হচ্ছে কম। ইমিটেশনের কানের দুল, চুড়ি ও পারফিউমের দোকানেও ভিড় আছে। যশোরের উপজেলা বাঘারপাড়া সদরের মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানেও এবার তুলনামুলকভাবে বেশ ভিড়। বাঘারপাড়ার উপজেলার আওতাধীন খাজুরা বাজার এলাকায় দোকানপাট কম। সেখানেও উপচেপড়া ভিড় হচ্ছে। খাজুরার এক স্কুল শিক্ষক রমজান আলী বললেন, কার হাতে কি পয়সা আছে কি সেই সেই বাছবিচার এই ঈদে সাধারণত করা হয় না। প্রায় সবাই রমজান মাসে দু’হাতে খরচ করে থাকে। ঈদের মার্কেটে তার প্রমাণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন