হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমাদ শফি বলেছেন, আল্লাহর ঘর মসজিদ আর নবীর ঘর হলো মাদরাসা। মাদরাসা হক্কানী আলেম তৈয়ারীর কারখানা। তাই আখেরাতের মুক্তির লক্ষ্যে নবীর ঘর মাদরাসা পরিচালনা করার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। তিনি ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বড়জোনা নূরুল কুরআন আল ইসলামিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মাদরাসা মাঠে আয়োজিত হাফেজ ছাত্রদের দস্তারবন্দী ও ইসলামী মহা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আল্লামা শফি আরো বলেন, নিজ এবং পরিবার পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে হবে। নামাজ কায়েম করতে হবে। নিজের পরিবারকে নামাজী বানাতে হবে। কোন মুসলমানের ঘরে যেন কেউ বেনামাজী না থাকে। এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে ২ কোটি ৮৮ লক্ষ বছর জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে। কেউ কোনদিন নামাজ কাজা করবেন না, নামাজের কথা ভুলবেন না। আল্লাহ্ জ্বিন এবং মানুষকে বানিয়েছেন শুধুমাত্র তাঁর এবাদত করার জন্য। সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মধ্যে থাকতে হবে। চলাফেরা-খাওয়া দাওয়া, ঘুম থেকে শুরু করে সর্বদাই জিকির আজকার করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের নির্বাহী সদস্য আল্লামা আশেকে মোস্তফা। সম্মেলন উদ্বোধন করেন তানজিমুল মাদারিসিল কওমিয়্যার চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রাক্তন উপ-সচিব আলহাজ্ব সামসুল আলম, শাইখুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী, আল্লামা মুফতি মনসুরুল হক, কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. মোঃ আমানত হোসেন খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, কাপাসিয়া থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম, কাপাসিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধান প্রমূখ ।
বক্তব্য রাখেন জামিয়া কাসেমীয়া ঢাকার প্রিন্সিপাল আল্লামা জুনাইদ আল হাবিব, গাউসুল আজম জামে মসজিদের খতীব আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবি, তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, মাদরাসার পরিচালক মাওলানা রেজাউল করিম প্রমূখ।
সম্মেলনে আল্লামা শাহ আহমাদ শফি মাদরাসার হাফেজ ছাত্রদের মাথায় পাগড়ী পড়িয়ে দেন। সম্মেলনের মঞ্চে একটি বিয়ে সম্পন্ন হয়। সম্মেলনে কাপাসিয়াসহ আশপাশের উপজেলা থেকে হাজার হাজার কওমী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক এবং সাধারণ মুসল্লীগণ অংশগ্রহন করেন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। বিশাল প্যান্ডেল ছাপিয়ে আশপাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুসল্লীরা আহমাদ শফির বয়ান শুনেন। বেলা ১২টায় তিনি হেলিকপ্টারে করে সম্মেলনস্থলে এসে পৌঁছেন। এসময় হাজার হাজার মুসল্লী তাঁকে নারায়ে তাকবির-আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। আল্লামা আহমাদ শফির আগমন উপলক্ষে মাদরাসা নুরুল কুরআন আল ইসলামিয়া বড়জোনার কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রস্ততি গ্রহণ করে। গত কয়েক দিন ধরে কাপাসিয়া উপজেলাব্যাপী লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, পোষ্টারিং সহ ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালায়। আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য জেলা ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা প্রদান করেন। সেই সাথে আয়োজকদের চার শতাধিক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। আল্লামা আহমাদ শফি'র আগমন গত কয়েকদিন কাপাসিয়ার প্রধান আলোচনার বিষয়ে পরিনত হয়েছিল। বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছিল ভিন্ন আবেগ ও অনুভূতি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন