শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

আগাম রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

দুপচাঁচিয়া উপজেলার গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে রস সংগ্রহে গাছীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার ২টি পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার গাছিরা ইতোমধ্যে খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করে গাছ নিয়েছে। তারা এখন এইসব মধুবৃক্ষ থেকে রস অহরণ শুরু করেছে। যদিও আগের মত শ’ শ’ খেজুর গাছের সারি আর দেখা যায় না। এরপরও যে গাছগুলো আছে শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুরের রস অহরণের জন্য এলাকার গাছিরা সেই গাছগুলোই প্রস্তুত করতে শুরু করছে। গাছিরা হাতে দা দিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে ওঠে গাছের ডালপালা কেটে পরিষ্কারসহ নিপুন হাতে গাছের ছাল তোলা, চাঁছা ও নলি বসানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এর মাঝে অধিকাংশ গাছই প্রায় কাঁটা হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে গতকাল উপজেলার বাঁকাদহ গ্রামের ওয়ারেছ আলী ফকিরের পুত্র গাছী বিশু ফকির দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, বাংলা কার্তিক মাসে খেজুর গাছগুলোর মালিকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গাছ কাঁটা শুরু করেছে। অগ্রাহায়ন মাসে প্রথম সপ্তাহেই পুরোপুরি গাছগুলো কাঁটা শেষ করে শুরু হচ্ছে রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতা। অগ্রাহায়ন, পৌষ, মাঘ এই তিন মাস খেজুরের গাছগুলো থেকে রস অহরণ আর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। গাছগুলো থেকে অহরনকৃত কিছু রস বাজারে বিক্রিসহ বেশী ভাগ রসই নিজ বাড়িতেই আগুনে জ্বাল দিয়ে যে গুড় ও লালী তৈরি করে পরে তা বাজারে বিক্রি হবে। তিনি আরও জানান, ইট ভাটায় খেজুর গাছের চাহিদা বেশী হওয়ায় এবং এ উপজেলায় ইট ভাটা আশংকা জনক বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের সাধারন মানুষ অভাবের তাড়নায় তাদের গাছগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে। এ ছাড়াও অনভিজ্ঞ গাছিরা গাছ কাঁটার সময় ভুল করায় অনেক গাছ মড়েও যাচ্ছে। তাই এখন আর আগের মত এ উপজেলায় খেজুর গাছ দেখা যায় না। ফলে এক সময় খেজুর রসের যে সমারোহ ছিল তা অনেকাংশে কমে গেছে। এক সময় শীতের এই সকালে রস বিক্রিতারা ভাঁড় বাশে হাঁড়ি কাধে নিয়ে খেজুরের রস বিক্রি করতো।

কালের বিবর্তনে এখন আর সেই দৃশ্য আগের মত চোখে পড়ে না। শীতের সকালে গøাস ভড়ে খেজুরের রস খাওয়াই ছিল লোভনীয়। এ ছাড়াও খেজুর রসের গুড় পাটালির চাহিদা এখনও রয়েছে। পুরো শীত নামার সাথে সাথেই প্রতিটি ঘরে ঘরে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা-পুঠি আর পায়েস তৈরির ধুম পড়বে। বিনা খরচে বেড়ে উঠা এই মধুবৃক্ষ প্রতি বছর শীত মৌসুমে মানুষের রসনা তৃপ্তির যোগান দিয়ে আসছে। চিড়া মুড়ি পিঠা খাওয়া কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সবার কাছে প্রিয়।
শীত মৌসুম এলেই উপজেলার সর্বত্র শীত উদযাপনের নতুন আয়োজন শুরু হয়। তাইতো শীত মৌসুমের শুরুইে এলাকার গাছিরা খেজুরের গাছ থেকে ছাল তুলা- চাঁছা আর কাঁটা সহ নলি বসানো কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এ সময় এলাকার গাছিদের মুখে ফুটে উঠে রসালো হাসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন