শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দখলদারদের কব্জায় ইউপি মার্কেট : তিন বছরেও উদ্ধার হয়নি, সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব

প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে : দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের মার্কেটটি দীর্ঘ ৩ বছরেও সরকার দখলে নেয়নি। ফলে প্রতি বছরই সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জানা গেছে, দুপচাঁচিয়া-আক্কেলপুর সড়কের উপজেলার জিয়ানগর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় মৃতঃ গাজী মন্ডলের ছেলে মেছের আলী মন্ডল ৭ শতক জায়গা দলিলমূলে জিয়ানগর ইউনিয়ন পরিষদকে লিখে দেয়। ১৯৮৭ সালে উক্ত জায়গার উপর সরকারিভাবে ভবন নির্মিত হয়। ১৯৮৮ সাল থেকে উক্ত নির্মিত ভবনে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালে জিয়ানগর বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার উত্তরে জিয়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল কমপ্লেক্স ভবন নির্মিত হয়। ২০১১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ পুরাতন ভবন থেকে নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়। ঐ সাল থেকেই নতুন কমপ্লেক্স ভবনের কার্যক্রম শুরু হয়। পুরাতন ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। এ দিকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে পরিষদের এক সভায় ইউনিয়নের রাজস্ব রায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিত্যক্ত পুরাতন ভবনটিতে ইউনিয়ন পরিষদের মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। পরিষদের মেম্বার নাছির উদ্দিন নাইসকে সভাপতি ও কায়ছার আলীকে সদস্য সচিব করে মার্কেট নির্মাণের একটি কমিটিও গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২১ কক্ষ বিশিষ্ট মার্কেট নির্মিত হয়। ২০১২ সালের ১৪ এপ্রিল উক্ত মার্কেটের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এ দিকে জিয়ানগর সোনার পাড়ার মৃতঃ নোবানু সোনারের ছেলে লোকমান হোসেন সোনার উক্ত মার্কেটে একটি দোকানের পজিশন পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। পজিশন না পাওয়ায় সে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট ইউনিয়ন পরিষদের জায়গায় অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ করেন। আইনের জটিলতা সৃষ্টি হলে ইউনিয়ন পরিষদ পরিত্যক্ত জায়গার উপর নির্মিত মার্কেট সহ জায়গাটি খাস বলে স্থানীয় ভূমি অফিসের নিকট স্থানান্তরিত করেন। এরপর থেকে হাট ইজারাদার প্রতি হাটবার সপ্তাহে ২ দিন প্রতিটি দোকান থেকে ৫ টাকা হারে খাজনা আদায় করে থাকে। এরই মাঝে দীর্ঘ প্রায় ৩ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে ইউনিয়ন পরিষদের উপর নির্মিত মার্কেটটি দখলে নেয়নি। মার্কেটে অবস্থিত ২১ জন দোকান মালিক ৩ বছরের অধিক যাবত কোন প্রকার মাসিক ভাড়া প্রদান ছাড়াই মার্কেটের দোকানগুলো দখলে রেখে ব্যবসা করে আসছে। এ ব্যাপারে মার্কেটের ব্যবসায়ী পাপিয়া ইলেকট্রিক স্টোরের স্বত্বাধিকারী ইছাহাক আলী, মা মেডিকেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান, সিয়াম লাইব্রেরী ও স্টেশনারীর স্বত্বাধিকারী ফারুক হোসেন, বধূয়া কসমেট্রিক্সের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব আলামুদ্দিন, মিম ডেকোরেটরের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান, মোহনা টেলিকমের স্বত্বাধিকারী গোলাম মরশেদ মিন্টু সহ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, মোজাফফর রহমান, আব্দুর রহমানসহ অন্যান্যরা “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, পরিষদ মার্কেটটি সরকারের কাছে স্থানান্তরিত করার পরপরই স্থানীয় মেম্বার কাউছার আলীর মাধ্যমে দোকানের পজিশন গ্রহণের জন্য নতুনভাবে তারা প্রত্যেকে উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করেছেন। দীর্ঘ দিনেও উক্ত আবেদনের কোন সুরাহা হয়নি। ফলে প্রায় ৩ বছরের অধিককাল যাবত তারা বিনা ভাড়ায় মার্কেটে ব্যবসা করে আসছে। এতে সরকার প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় আলোচনা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহেদ পারভেজ জানান, জিয়ানগর ইউনিয়ন পরিষদ মার্কেটটির বিষয়ে তিনি কিছু অবগত নয়। বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন