রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শিক্ষক-কর্মচারীর মানবেতর জীবন

১৫ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ

আনোয়ার হোসেন আলীরাজ, সিংড়া (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

নাটোরের সিংড়ায় চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি শাখা ১৫ বছরেও এমপিওভুক্ত করা হয়নি। চলতি বছর উপজেলার ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। অথচ অবকাঠামো ও শিক্ষার্থী থাকা সত্তে¡ও চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করা হয়নি। ফলে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এ কলেজের ৪৫ শিক্ষক ও কর্মচারী।
নারী শিক্ষার মানউন্নয়নে ১৯৯৫ সালে সিংড়া চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজকে উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠদানের অনুমতি দেয়া হয়। শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক ভাবে ভালো ফলাফল করে আসছে। স্বল্প সময়ে উপজেলায় সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে কলেজটি। উপজেলার একমাত্র মহিলা ডিগ্রি কলেজটিতে ২০০৫ সালে ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়। বর্তমানে কলেজে ডিগ্রির পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৪৮জন এবং উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪১ জন। চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি পর্যায়ে শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা ৪৫ জন। এমপিওভুক্ত না হয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত এসব শিক্ষক সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিবিএস শিক্ষার্থী রেমি খাতুন, ইসরাত জাহান চাপা, রিমা পারভীন ও সীমা খাতুন শিক্ষার্থী কলেজ অধ্যক্ষের প্রশংসা করে বলেন, মেধাবী ও গরীব শিক্ষার্থীদের নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে পড়ালেখার সুযোগ করে দেন অধ্যক্ষ।
মনোবিজ্ঞানী শিক্ষক গোলাম রাব্বানী বলেন, ভেবেছিলাম নিজেকে আত্মনিয়োগ করবো সম্মানজনক ১টি পেশায়। তাই এ পেশা বেছে নিয়েছিলাম। ২০০৫ সাল থেকে বিনা বেতনে কলেজে শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। দীর্ঘ ১৫ বছরে কোনো বেতন ভাতা পাইনি।
সমাজ বিজ্ঞানীর শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষক হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। আর এই কারিগরদের আজ করুণ অবস্থা। দেখার কেউ নেই, বেতন-ভাতা না থাকায় অনেক কষ্ট করে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। ছেলে মেয়েদের জন্য ১টি টাকাও সঞ্চয় করতে পারিনি।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল আলিম জানান, ১০ বছর পর অনেক অযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। অথচ সিংড়া চলনবিল মহিলা ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করা হয়নি।
অধ্যক্ষ গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, নারী শিক্ষার মানোন্নয়নে ২০০৫ সালে কলেজটিতে ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়। এমপিভুক্তের জন্য অনলাইনে আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু কি কারণে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তা আমার জানা নেই। তিনি আরও বলেন, কলেজটিকে এমপিওভুক্ত করা হলে শিক্ষকদের পাঠদানের স্পৃহা আরও বাড়বে। নারী শিক্ষার মান উন্নয়নে চলনবিল অধ্যুষিত মহিলা ডিগ্রি কলেজটি এমপিওভুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সিংড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুর রহমান বলেন, অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় শিক্ষার্থীসহ সব কিছুই ঠিক আছে। তবে কেনো এমপিওভুক্ত হয়নি, তা আমার জানা নেই।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, এমপিওভুক্তের বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন