পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ার মৎস্যবন্দর মহিপুর বাজারের প্রবেশের সড়কটি এখন মৎস্য ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর জন্য মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। সড়কের ওপরের অংশ কার্পেটিংয়ে ভেঙে ইটের খোয়া বেরিয়ে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য বড় বড় গর্ত। স্থানীয় প্রশাসনের নজনদারির অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি বেহাল দশায় রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। রাস্তটি ভেঙে যাওয়ায় চরম জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাজস্ব আয় ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকার সচেতন মহল।
মহিপুর বাজার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এখানে সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার দিন হাটবসে। এ ছাড়াও প্রতিদিন সকাল ও বিকাল বাজার বসে। এখানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ কিনতে প্রতিদিন ক্রেতারা আসেন। কলাপাড়া-মহিপুরের পাকাসড়কের সাথে বাজারটি হলেও মহিপুরে বাজার দিক থেকে হেট ঢুকতে প্রবেশের রাস্তাটি একবারে ভেঙে গেছে। ফলে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। দুঘটনা কবলিত হচ্ছে মালবাহী পিকআপ ভ্যান, ট্রাক, কাভারভ্যান, ভ্যানসহ যানবাহন। ফলে ব্যবসায়ীরা ইলিশ মাছও মালামাল আনা নেয়া করতে গিয়ে মারাতœক দুর্ভোগে শিকার হচ্ছেন। ভাঙ্গাচোরা রাস্তার কারণে প্রায়ই মালামাল পরিবহনকারী যানবাহন দুর্ঘটনায় পরায় ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া এ বাজারে আসা ক্রেতারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এই বাজার থেকে প্রতি বছর সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় হলেও এ রাস্তাটি মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার হাজার হাজার মানুষকে। মহিপুর নবগঠিত থানা হয়েছে তাই পুলিশ প্রশাসনকে গাড়ি নিয়ে তাদের ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। প্রতি বছর মৎস্য বন্দর থেকে কোটি কোটি টাকার ইলিশ মাছ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় কিনতে আসে এবং বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বিক্রি করা হয়। এছাড়া সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, পোস্ট অফিস, ভুমি অফিস, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মহিপুর কোঅপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শত শত কমলমতি শিক্ষার্থীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। এলাকা বাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এ ভাঙা রাস্তাটি সংস্কার হলে এলাকাবাসীর জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন ঘটবে।
এ ব্যাপারে মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপ্তি রানী ভেীমিক বলেন, মহিপুর বাজার প্রবেশের রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ন অবস্থায় রয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য এই রাস্তাটি একমাত্র পথ। এ রাস্তা ওপর দিয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলের জন্য এই রাস্তাটি একমাত্র পথ। বাজারে দিন ছাড়াও প্রতিদিনই জনসাধারকে এ রাস্তা দিয়ে বাজারে আসতে হয়। বাজারে প্রবেশের প্রধান রাস্তাটি ভেঙে জরাজীর্ন হওয়ায় কৃষকদের উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাছাড়া রাস্তাটি সামনে রয়েছে মহিপুর কোঅপারটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয় যাতায়ত করতে হয়। তাই দ্রুত রাস্তাটি নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
মহিপুর মৎস্য ব্যবসাযী সমিতির একাধিক ব্যবসায়ী জানান, দক্ষিনাঞ্চলের একমাত্র মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহীপুর। মহীপুর থেকে সবচেয়ে বেশি মাছ রপ্তানি করা হয়। কিন্তু দুঃেেখর বিষয় ট্রাক বা গাড়িতে মাছ ভর্তি করে নিয়ে আসা যাওয়ার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরছে।
এ ব্যাপরে কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের এ বছরের কোনো পরিকল্পনা নেই রাস্তাটি করার। তবে আইআরআইডিপি প্রজেক্ট ওই কাজটি করার ব্যবস্থা করছে। ওইখান থেকে কাঠাবাড়ানি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা কিছু দিনের মধ্যে করার পরিকল্পনা রয়েছে সেই সাথে মহিপুর প্রবেশ মুখের রাস্তাটি করার সম্ভবনা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন