শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

নাটোরে ডেইরি ফার্ম করে সাফল্য

মো. আজিজুল হক টুকু, নাটোর থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

গাভী পালন করে সচ্ছলতা অর্জনের অনন্য নজির করেছেন নাটোরের মাদরাসা সুপার মাওলানা মুনসুর রহমান। ২টি গাভী নিয়ে তিনি ডেইরি ফার্ম শুরু করেন, এখন তার ফার্মে রয়েছে ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী ৪০টি গরু ও বাছুর। ফার্মে প্রতিদিন উৎপাদিত হয় ২শ’ থেকে আড়াইশ’ লিটার দুধ যা থেকে মাসে আয় হয় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত মুনসুর রহমান শিক্ষা-জীবনে ছিলেন চরম অর্থসংকটে। সে সময় তিনি বাধ্য হয়ে দিনমজুরের কাজ করলেও কখনো হতাশায় ভুগতেন না নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল এলাকায় বেড়ে ওঠা মুনসুর রহমান পারিবারিকভাবে গাভী পালনে বেশ দক্ষতার অধিকারী ছিলেন। এ দক্ষতা কে পুঁজি করে তিনি বিগত ১৯৯৪ সালে দুইটি গাভী নিয়ে শুরু করেন তার জমজম ডেইরি ফার্ম।
মাওলানা মনসুর রহমান ১৯৯৮ সালে নওগাঁ গাউসুল আজম আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল ডিগ্রি লাভ করেন এবং মূলত এর পরপরই তিনি ১টি সফল দুগ্ধ খামারের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেন। তিনি গাভীর বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখেন এবং সেগুলোতে কেনো লোকসান হয় তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। মাওলানা মনসুর রহমান মনে করেন একটি গাভীর খামারের জন্য গাভী যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ তার বাছুরটিও। বাছুর না হলে দুধ হয় না আবার এক বছর পর ওই বাছুরটি বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায়। তার মতে ১ লাখ টাকার একটি গাভী থেকে বছরে ন্যুনতম ৬০ হাজার টাকা আয় খুব একটা কম নয়।
মুনসুর রহমানের শ্লোগান হলো, খাঁটি দুধ আমি খাব, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে খাবো। তিনি দাবি করেন তার খামারে দুধের মান ভালো রাখার জন্য কেমিক্যাল মিশ্রিত খাবারের পরিবর্তে ঘাস, খৈল, ভূঁসি, চিটাগুড় ও লবণ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। পর্যাপ্ত কাঁচা ঘাসের প্রয়োজন মেটানোর জন্য তিনি নিয়মিতভাবে ১২ বিঘা জমিতে চাষ করেন ‘পাকসং’ জাতের উন্নত ঘাস।
মাওলানা মুনসুর রহমান জানান, নাটোর একটি জেলা শহর হলেও এখানে সরকারি পশু হাসপাতাল থেকে খামারের গাভীর সুচিকিৎসা বা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা তেমন পাওয়া যায় না। গাভীর রোগের যেকোনো টেস্ট করাতেও যেতে হয় জয়পুরহাটে। এছাড়া গরুর খুরা রোগ বা গাভীর ওলান প্রদাহ রোগের ভ্যাকসিন গাভীর প্রজননের জন্য, উন্নত জাতের বীজ এবং যাবতীয় রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাই করতে হয় প্রাইভেট ভাবে। এসব ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা পাওয়া গেলে আরও সুফল পাওয়া যেতো বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে নাটোর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ এখন গাভী-খামারীদের সহায়তা প্রদান করছে। ছোট ধরনের রোগ নির্ণয় ব্যবস্থা নাটোরে থাকলেও মারাতœক ধরনের রোগ নিশ্চিত ভাবে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা নাটোরে নেই। এ জন্য জয়পুরহাটে অবস্থিত রাজশাহী বিভাগীয় রোগ অনুসন্ধান কেন্দ্রে স্যাম্পল পাঠাতে হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন