শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নদী আছে মাছ নেই

প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এমএ ছালাম, মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে
দেশী জাতের ছোট এবং বড় মাছগুলোর স্বাদের কথা ভুলতেই বসেছে নওগাঁর মহাদেবপুরসহ আশপাশ এলাকার মানুষ। যে এলাকাগুলো ছিল এক সময় দেশি মাছের ভা-ার, সেসব এলাকা এখন ভা-ার শূন্য। এখন আছে খাল-বিল-ঝিল, ডোবা-নালা কিন্তু নেই মাছ। নদী আছে কিন্তু সেখানেও মাছ নেই। এক সময় এসব খাল-বিল-ঝিল, ডোবা-নালা এবং নদীতে পাওয়া যেত ছোট-বড় পর্যাপ্ত দেশী মাছ। কৈ, শিং, পবা, টেংরা, বাউশ, গুচি, পুঁটি, মলা, ঢেলা, চেলা, রাইখৈর, কেকলা, টেপা, আইড়, শৈল, বোয়াল, চিতল, জালমাছ ও চান্দাসহ অসংখ্য প্রজাতীর মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যেত ওইসব জলাধারে। কোন চাষাবাদ ছাড়াই এসব মাছ প্রাকৃতিকভাবেই জলাধারগুলোতে পাওয়া যেত প্রচুর পরিমাণ। সে মাছ একদিকে পল্লীর মানুষের খাবারের চাহিদা পূরণ করতো, অপরদিকে অনেকে ওই মাছ হাটবাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। গ্রামে-গঞ্জে ধুম করে ধরা হতো মাছের ঝাঁক। কেউবা জাল পেতে, কেউবা খোলশানি পেতে, কেউ ছিপ ফেলে, কেউ কাপড় দিয়ে, কেউবা আবার দলবেঁধে জলাধারের পানি শুকিয়ে মাছ ধরতো। এ এলাকায় এভাবে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যেত বলে এর নাম হয়েছিল প্রকৃতির মৎস্যভা-ার। মৎস্যভা-ার দূরে থাক, এখন এ এলাকায় যেন মাছের আকালই কাটছে না। খাল-বিল ও নদী-নালায় ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধুম করে ধরার দৃশ্য এখন শুধুই স্মৃতি। স্থানীয় জলাধারগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে এখন মূল্যও হয়েছে আকাশচুম্বী। বর্তমান যে উচ্চ বাজারমূল্য তাতে নি¤œ বিত্তদের জন্য মাছ ক্রয় করে খাওয়া কঠিন। অনেক সময় মধ্যবিত্তদের জন্যও মাছ ক্রয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্থানীয় অভিজ্ঞরা মনে করেন, অন্যান্য কারণের সাথে জমিতে অপরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলেই এ এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন কমে গেছে। সে কারণে মানুষজন এখন উপজেলা সদরের হাটবাজার দূরে থাক, প্রত্যন্তপল্লীর বাজারগুলো ঘুরেও দেশী জাতের ছোট অথবা বড় কোন মাছই যোগাড় করতে পারছেন না। এমনকি বিশেষ কোন প্রয়োজনেও দেশি মাছ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমান সময়গুলোতে ছোট মাছগুলো স্থানীয়দের কাছে সোনার হরিণের মত হয়ে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন