শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইসি কর্মীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা

রোহিঙ্গাদের এনআইডি

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র-এনআইডি দিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে জ্ঞাত আয়বহির্ভ‚ত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মীসহ আটজনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। মামলার প্রধান অভিযুক্ত নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে দুদকের ১ নম্বর ও ২ নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি দায়ের করা হয়। এর মধ্যে দুদকের ২ নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ৬৯ লাখ সাত হাজার ৪৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভ‚ত সম্পদ অর্জনের মামলায় শুধু জয়নালকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন, দুদকের ১ নম্বর চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক জাফর সাদেক শিবলী।

অপরদিকে মোট ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা পাচারের অভিযোগে উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের করা মামলায় জয়নালসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে। অপর আসামিরা হলেন- জয়নালের স্ত্রী আনিছুন নাহার, জাফর, ঢাকায় এনআইডি প্রকল্পের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সত্য সুন্দর দে, জয়নালের সহযোগী সীমা দাশ, তার ভাই বিজয় দাশ, চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অস্থায়ী অফিস সহায়ক ঋষিকেশ দাশ, বান্দরবান সদর উপজেলার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিরুপম কান্তি নাথ।

আসামিদের মধ্যে ঋষিকেশ ও নিরুপমকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়। জয়নালের স্ত্রী ও জাফর ছাড়া অন্যরা এনআইডি জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। অর্থ পাচারের মামলার অভিযোগে বলা হয়- পরস্পর যোগসাজশে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখায় ৩৪ লাখ তিন হাজার ১৫২ টাকা, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক আনোয়ারা শাখায় ২৮ লাখ ২০ হাজার ১৪৪ টাকা, প্রাইম ব্যাংক বাঁশখালী এক লাখ ১০ হাজার এবং এসএ পরিবহনের মাধ্যমে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর বাড়ি নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আট আসামির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪(২) ও দÐবিধির ১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা হয়েছে। অন্যদিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভ‚ত ৬৯ লাখ সাত হাজার ৪৪২ টাকার সম্পদ নিজের ভোগ দখলে রাখার ঘটনায় জয়নালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা হয়।
গেল আগস্টে এক রোহিঙ্গা নারী ভুয়া এনআইডি নিয়ে চট্টগ্রামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে গিয়ে ধরা পড়েন। ওই এনআইডির সূত্র ধরে জালিয়াত চক্রের খোঁজে নামে নির্বাচন কমিশন। এনআইডি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল, দুই সহযোগী সীমা ও বিজয়কে আটক ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করে পুলিশে দেন ইসি কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় করা মামলার তদন্ত করছে নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

তদন্তকারী সংস্থা এ জালিয়াতির সাথে ইসির বড় বড় কর্মকর্তাদের জড়িত থাকারও প্রমাণ পেয়েছে। তবে তাদের কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। এ পর্যন্ত নির্বাচন অফিসের চারজন স্থায়ী ও প্রকল্পের অধীনে কর্মরত সাতজনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে নির্বাচন কর্মকর্তাদের অর্থিক দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে দুদক। চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন নির্বাচনী কর্মকর্তার সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠিও দিয়েছে। দুদকের একটি সূত্র জানায়, এনআইডি জালিয়াতির মাধ্যমে ইসির কর্মকর্তারা বিপুল অংকের অর্থ আয় করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন