নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল আসাম রাজ্য। কারফিউ, সেনা-আধাসেনার টহলদারি, প্রধানমন্ত্রীর টুইট আহ্বান সব উপেক্ষা করে ভারতের আসাম রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাস্তায় নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। দোকান, গাড়ি, বাড়ি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে জনতা। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দিনভর উত্তেজনায় নিহত হয়েছে পাঁচজন। আহত হয়েছেন অনেকে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল আসাম রাজ্য। ভারতের রাজ্যসভায় এই বিল পাস হওয়ার পর থেকেই সেখানকার বাসিন্দারা প্রতিবাদ শুরু করে, যা পরবর্তীতে সহিংসতার রূপ নেয় ।
বুধবার রাজ্যসভায় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে আনা হয়েছে এ বিল। তবে আসামের বিক্ষোভকারীদের দাবি, এ পদক্ষেপের ফলে ওই অঞ্চলে বিদেশি শরণার্থীর ঢল নামার আশঙ্কা আছে। বিলটি পাশের পর বুধবারই আসামে কারফিউ জারি হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই কারফিউ ভেঙে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
উত্তেজনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারই আসামের ১০টি জেলায় ইন্টারনেট সেবা আরও ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া যেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে সেই চারটি এলাকায় সেনা মোতায়েন করা হয়।
এ সম্পর্কে আসামের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণা জানান, আসামের ১০ জেলায় আরো ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে এটি কার্যকর হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর নিজের এলাকা ছাবুয়ার বিধায়ক বিনোদ হাজরিকার বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। আক্রান্ত হয় মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা শান্তনু ভরালি, বিজেপির মন্ত্রী রঞ্জিত দত্ত, বিধায়ক আঙুরলতা ডেকার বাড়িও। সকালে আসাম গণপরিষদের গুয়াহাটির আমবাড়ি সদর দফতরে ভাঙচুরও হয়।
মারমুখী জনতাকে ঠেকাতে পুলিশ বহু জায়গায় লাঠি চালায় ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। গুয়াহাটিসহ বেশ কিছু জায়গায় গুলিও চালায় তারা। লালুংগাঁওয়ে পুলিশের গুলিতে ১৩ জন আহত হন। এমনকি তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়। চাঁদমারির রেলপথে আগুন জ্বালানো হয়। পাথর ছোড়া হয় ডিজিপি ভাস্করজ্যোতি মহন্তের গাড়ি লক্ষ্য করে। ডিব্রæগড়ের চাবুয়ায় সার্কল অফিস, পোস্ট অফিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, জেলা পরিষদ কার্যালয় পোড়ানো হয়।
পরিস্থিতি সামলাতে এ দিন ইউনিফায়েড কমান্ডের বৈঠক বসে। গৌহাটির পুলিশ কমিশনার দীপক কুমারকে সরিয়ে মুন্নাপ্রসাদ গুপ্তকে নতুন কমিশনার করা হয়েছে। এডিজিপির (আইনশৃঙ্খলা) দায়িত্ব থেকে মুকেশ আগারওয়ালকে সরিয়ে তার জায়গায় এনআইএ-র আইজি জি পি সিংহকে আনা হয়েছে। তার পরেও অবশ্য রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি উত্তপ্তই। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সেনাবাহিনীর হাতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব তুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
রাজ্যবাসীর উদ্বেগ দূর করতে বৃহস্পতিবার সকালে অসমিয়া ভাষায় টুইট করে আসাম চুক্তির ষষ্ঠ ধারার রূপায়ণ ও অসমিয়াদের স্বার্থরক্ষার প্রতিশ্রæতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হিংস্র আন্দোলন ঠিক নয়। নেতাদের একাংশ ইচ্ছাকৃত ভাবে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন।”
পরিস্থিতি সামলাতে গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার দীপক কুমারকে সরিয়ে মুন্নাপ্রসাদ গুপ্তকে নতুন কমিশনার করা হয়েছে। এডিজিপির (আইন-শৃঙ্খলা) দায়িত্ব থেকে মুকেশ আগরওয়ালকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় এনআইএ-র আইজি জি পি সিংহকে আনা হয়েছে। তার পরেও অবশ্য রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি উত্তপ্তই। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সেনাবাহিনীর হাতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব তুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন