বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ব্যস্ত সময় পার করছেন মাথাফাটার টুপি পল্লীর কারিগররা

প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পঞ্চগড় জেলা সংবাদাতা

পবিত্র রমজান আসার পরেই শুরু হয় টুপি তৈরির তোরজোড়। আর ক’দিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের উৎসবে পায়জামা-পাঞ্জাবির সঙ্গে চাই নতুন টুপি। তাই যোগান দিতে দিনরাত কাজ করছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মাথাফাটা গ্রামের এই টুপির কারিগররা। জানা যায়, বহুদিন আগ হতে এখানকার তৈরি টুপি বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে। তেঁতুলিয়া উপজেলার মাথাফাটা গ্রামটি বর্তমানে টুপিপল্লী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এ গ্রামে গড়ে উঠেছে মেসার্স আল তামিম, ওসমান, আলিঙ্গন, আল ইকরা ও মেসার্স আল খাইয়্যাত ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ। এসব কারখানায় কাজ করে বেকার যুবক এবং দুস্থ নারীরা জীবিকা নির্বাহ করছেন। এখানে তৈরি টুপির ক্রেতাদের বেশিরভাগই ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের ব্যবসায়ী। এছাড়া যশোর, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুরসহ বড় শহরগুলোতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু ব্যবসায়ী পাকিস্তান, সউদী আরব, জাপানসহ কয়েকটি দেশে টুপি রফতানি করছেন। কারখানার মালিকরা বলেন, এখানকার তৈরি টুপি মান, আকার ও প্রকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়। একেকটি টুপিতে লাভ হয় ১০-২০ টাকা। সুতা, কাপড় ও জরির দাম বেড়ে যাওয়ায় টুপির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। চীন থেকে আমদানি করা টুপির সঙ্গে পাল্লা দেয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে কারখানাগুলোতে প্রায় তিনশ’ শ্রমিক কাজ করছেন। কারিগররা টুপি তৈরির কাজ করে মাসে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা আয় করে থাকেন। আবার নারী শ্রমিকেরা সংসারের কাজের ফাঁকে কারখানায় প্রতিদিন চার-পাঁচ ঘণ্টা কাজ করেন। আশপাশের নারী শ্রমিকেরা হাতের কাজ করার জন্য কিছু টুপি বাসায় নিয়ে যান। এভাবে তাঁরা প্রতি মাসে বাড়িতে বসেই তিন থেকে চার হাজার টাকা আয় করে থাকেন। রোববার হারুন উর রশিদের আল ইকরা ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজে গিয়ে দেখা যায়, তিনি টুপি তৈরির কাজ তদারক করছেন। কুলসুম, রহিমা, রাবেয়া, উম্মে কুলসুমসহ শ্রমিকেরা কাজ করছেন। এই আল ইকরা ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক হারুন উর রশিদ বলেন, এখানকার তৈরি টুপির চাহিদা বেশ। কিন্তু হাতে তাদের পুঁজি স্বল্পতা রয়েছে। স্বল্পসুদে ঋণ পাওয়া যায় না। তারা চীন থেকে আমদানি করা টুপির উপর কর আরোপের দাবি জানান। জানা যায়, দিনে ২০-২৫টি টুপি তৈরি করা যায়। প্রতিটির মজুরি ১০-২০ টাকা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, এই গ্রামে প্রথমে আবদুল হান্নান টুপি তৈরির কারখানা চালু করেন। এরপর আরো চারজন চালু করেছেন। এসব কারখানায় কাজ করে গ্রামের চিত্র বদলে গেছে। প্রসঙ্গত; ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। মেধা-মনন ও শ্রম আর অর্থলগ্নি করেই স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। আর এভাবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। শিক্ষিত বেকাররাও এক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন