নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ ভারতের যুবকদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছেন বলে বিজেপি সরকারের তীব্র নিন্দা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ভারতে অর্থনৈতিক মন্দা ও নাগরিক বিতর্কে চলমান বিক্ষোভ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন রাহুল।
বেকারত্ব ও আর্থিক মন্দায় যখন ভুগছে ভারত, তখন জনগণের দৃষ্টি সরাতে মোদি সরকার এই ধর্মভিত্তিক নাগরিকত্ব বিল পাস করে দ্ব›দ্ব সংঘাতের সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ রাহুল গান্ধীর।
গতকাল রোববার টুইটারে ভারতের যুবসমাজকে উদ্দেশ্য করে রাহুল বলেন, প্রিয় যুবসমাজ! মোদি ও শাহ তোমাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করেছে। তাদের দ্বারা তৈরি আর্থিক মন্দা ও বেকারত্বের ফলে তোমাদের মধ্যে তৈরি হওয়া আক্রোশ ওরা কমাতে পারছে না। তাই তারা ঘৃণার রাজনীতি ছড়িয়ে দেশভাগে মত্ত¡ হয়েছেন। একমাত্র ভালোবাসা ছড়িয়ে দিয়ে আমরা এই রাজনীতিকে পরাজিত করতে পারব।
এদিকে রবিবার রাজঘাটে কংগ্রেসের তরফে সিএএ-বিরোধী প্রচারসভার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে সোমবার করা হয়েছে।
কংগ্রেসের সব শীর্ষ নেতাই সোমবারের সভায় উপস্থিত থাকবে বলে খবর। এদিন আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির রামলীলা ময়দানে একটা জনসভা করেন। বছর ঘুরলেই সে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এদিন প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে 'প্রচার ফিতে' কাটিয়ে রাখলো বিজেপি বলে দাবি দলের একটা সূত্রের। সেই জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, এদেশে কোনও ডিটেনশন সেন্টারই নেই। এমনকী প্রতিবাদীদের কাছে টানতে রবিবার তিনি বলেন, 'যাঁরা ভারতীয় মুসলিম, তাঁদের সঙ্গে সিএএ বা এনআরসি'র কোনও যোগ নেই। তাঁদের কেউ ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাবে না। এদেশে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প নেই। যদি কেউ সে কথা বলে থাকে; তাহলে সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন।"
এদিকে ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে ১০ দিন ধরে চলা বিক্ষোভকালে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে, চলছে গণগ্রেফতার-আটক। এমন পরিস্থিতিতেও জন দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের।
বরং বিক্ষোভ দমাতে ইন্টারনেট বন্ধ। ১৪৪ ধারা জারির পর এবার টেলিভিশনে জাতীয়তাবাদবিরোধী সংবাদ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভে পুলিশকে নির্বিচারে গুলি চালাতে দেখা গেছে। ‘মেরে ফেল সবকটাকে’ বলেই গুলি চালানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মুজাফফরনগরে বিক্ষোভে সমর্থন দেয়া ৬০ জনেরও বেশি দোকানির দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রোববারও তার ভাষণে জনগণকে এই আইন মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এবার বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে চলা তীব্র নাগরিক আন্দোলনের মধ্যে রাহুল গান্ধীর এ টুইট যুবসমাজকে উস্কে দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন