আগামী বছরের শুরুতে নতুন অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস-৫০০’ এর পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এর ফলে রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা বহুগুনে বেড়ে যাবে। প্রযুক্তিগতভাবে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একছত্র আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে রাশিয়া। নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার ফলে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের থেকে বহুগুণে এগিয়ে যাবে তারা।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানী মস্কোয় দেশটির উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যালেক্সি ক্রিভোরুচকো সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া আগামী বছর অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস-৫০০’ এর প্রাথমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করবে। রাশিয়ান উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘পরীক্ষাটি সম্পন্ন হলে এই ব্যবস্থার প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র ২০২৫ সালে উৎপন্ন হবে। কেবল মধ্যম ও দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার লক্ষ্যেই এই আকাশ প্রতিরক্ষা নির্মিত হতে যাচ্ছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া এমন এক সময়ে ‘এস-৫০০’ এর পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দিল, যখন রুশ প্রশাসনের কাছ থেকে ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সংগ্রহ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চরম ক্ষোভের শিকার হয়েছে ইউরোপের দেশ তুরস্ক।
বর্তমানে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়ার ‘এস-৪০০’ এর সক্ষমতা প্রমাণিত। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘প্যাট্রিয়ট’ কিংবা ‘থাড’ থেকে এটি অনেক বেশি শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের গর্ব ‘এফ-৩৫’ যুদ্ধ বিমানকে এটি অনায়াসেই ধ্বংস করতে পারবে।
নতুন ‘এস-৫০০’ ব্যবস্থা বর্তমান ‘এস-৪০০’ এর আধুনিক সংস্করণ নয়, বরং সম্পূর্ণ নতুন ডিজাইনের। এতে আগের থেকেও অনেক নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর পাল্লা ভূমিতে ৬০০ কিলোমিটার এবং উচ্চতায় ৪০ কিলোমিটার। তবে ২ হাজার কিলোমিটার আগে থেকেই এটি যে কোন ক্ষেপনাস্ত্র সনাক্ত করতে পারবে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই সিস্টেমটি একসাথে ২০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র সনাক্ত করতে এবং একবারে ১০টি ধ্বংস করতে সক্ষম। এটি প্রতি সেকেন্ডে ৫-৭ কিলোমিটার গতিতে মিসাইল ছুঁড়তে পারে। বলা হচ্ছে, এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মহাকাশে নিচের কক্ষপথে থাকা উপগ্রহগুলোকেও আঘাত করতে পারে।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘এস-৫০০’ সবার আগে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে মোতায়েন করা হবে। এটি বর্তমান এ-১৩৫ অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল সিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করবে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা শুধুমাত্র আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, নজরদারি রাডার এবং জ্যামিং বিমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। সূত্র: জিনহুয়া, রয়টার্স, স্পুটনিক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন