রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মিরসরাইয়ের বিপণিবিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে

বৃষ্টি আর রোদের তীব্রতা উপেক্ষা করে মিরসরাইয়ের বিভিন্ন বিপণিবিতান, মার্কেট ও শোরুমগুলোতে জমে উঠেছে আসন্ন ঈদ কেনাকাটা। ক্রমেই বাড়ছে দোকানিদের ব্যস্ততা। দেশিয় পণ্যের পাশাপাশি ভারতীয় পোশাকে সয়লাব বিপণিবিতানগুলো। পাশাপাশি আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে দর্জিরাও। রাতভর সেলাই মেশিনের শব্দে সমাগম হয়ে থাকছে টেইলার্সগুলো। ছোট থেকে শুরু করে ভিআইপি দোকানের কারিগররাও এখন দিনরাত ব্যস্ত। দম ফেলারও যেন ফুরসত নেই তাদের। তবে গতবারের চেয়ে এবার উপজেলার মার্কেট, বিপণিবিতান, শোরুমগুলোতে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বিশেষ করে গার্মেন্টস ও কসমেটিকস দোকানগুলোতে তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের ক্রেতাদের বেশি সমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত অবদি চলছে বিকিকিনি। মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাটের মসজিদ গলি, জমিদার প্লাজা, গ্রীণ টাওয়ার, সেঞ্চুরি মার্কেট, জোরারগঞ্জের যুবরাজ মার্কেট, আল-মদিনা শপিং সেন্টার, স্কুল মার্কেট, মিঠাছরার প্রাচীন দোকান আল আমিন, শাহজাহান সুপার মার্কেট, মিরসরাই সদরে টুকু মিয়া মার্কেট, কাশেম শপিং সেন্টার ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পোশাকে সয়লাব হয়ে উঠেছে দোকানগুলোতে। ভারতীয় সিরিয়ালের নামে শাড়ি ও থ্রি-পিসে ভরপুর ছোট বড় মার্কেটগুলো। ভারতীয় পোশাকের মধ্যে রয়েছে কিরণমালা, ইস্কেলিলা, বিন্দান, কটকটি, বজ্রমালা, ফ্লোরটাচ, জলপরি, ইচ্ছেনদী, পরি, ঝিলিক, রাজকন্যা, লাবণ্য, ঝিলমিল, পাটিয়ালি, শঙ্কমালা, নন্দিনী, আঁখি, পাখি, জলনুপুর, বজরঙ্গি ভাইজান উল্লেখযোগ্য। আগে ছিল-মাসাক্কালি, জিপসি, ঝিলিক, বাহা। গতবার ছিল-পাখি। এবারের ঈদে তরুণীদের পছন্দের তালিকায় প্রাধান্য পেয়েছে কিরণমালা, লেহেঙ্গা ও ফ্লোরটাচ থ্রি-পিচ নামের কতিপয় পোশাক। এবার দোকানগুলোতে লেগেছে কিরণমালার ঝড়। আর এর সুযোগ নিচ্ছেন কতিপয় অসাধু বিক্রেতারা। কোন পোশাকে পুঁতি বা পাথরের কাজ করা থাকলেই নাম দেয়া হচ্ছে “কিরণমালা”। এই নামের ওপরেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মেয়েরা। এসব পোশাকের আগ্রাসনে দেশীয় পোশাকের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন ক্রেতারা। অবৈধ পথে এসব পোশাক আশায় একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে দেশিয় পোশাকের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। দোকানিরা বলছে এগুলো বৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে। ভারতীয় থ্রি-পিসগুলোর বেশি ভাগেই নাম ভারতীয় ছবির নায়ক ও নায়িকাদের নামানুসারে করা হয়েছে। ঈদের আমেজকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট, বিপণিবিতানগুলো বর্ণিল সাজে আলোক সজ্জা করা হয়েছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য রকমারি দোকান থেকে মাঝে মাঝে মান ভেদে পণ্য সামগ্রীর বিশাল মূল্য ছাড় ও লাকী কুপনের সুর্বণ সুযোগের মাইকিং করা হচ্ছে। আর্কষণীয় এসব অজানা অফারে কিছু কিছু তরুণ-তরুণীসহ অনেকেই ছুটছেন সেই সব বিপণিবিতানগুলোতে। মিঠাছরার পুরোনো দোকান আল-আমিন এর প্রোপ্রাইটর নুরুল আলম হাসান জানান দীর্ঘ ৩৫ বছর আমি কাপড় ব্যবসা করছি। কিন্তু অনেক বছরের থেকে এবার বাজার অনেকটাই মন্দা। তবুও ঈদ বলে কথা। এবার  কিরণমালা আর ফ্লোরটাচ এর প্রতিই সবচেয়ে বেশি উৎসাহি দেখা যাচ্ছে।  বারইয়ারহাটের রংধনু ক্লথ এন্ড গার্মেন্টেস’র দোকানি ইমাম উদ্দিন জানান, শিশু, মহিলা ও পুরুষের অত্যাধুনিক পোশাকের সমারোহ করা হয়েছে। কিরণমালা, পাখি, ফ্লোরটাচ, লংফ্রগ, বিস কটোন ও ঝিলিকসহ নামের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে বেশি। দামের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সবকিছুর সাথে তাল মেলানোর হিসেব কষলে দাম একটু বাড়িয়ে নিতে হয়। তবে আমরা গ্রামাঞ্চলের হিসেবে সামান্য লাভে পণ্য বিক্রি করে দিচ্ছি। বেশি মূল্যে নেয়া হয় শহর কেন্দ্রিক দোকানগুলোতে। জোরারগঞ্জের জে.আর ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী তাপস কুমার সিংহ জানান, দিন-রাত সমান তালে বিক্রয় হচ্ছে। দিনে গ্রাম অঞ্চলের ক্রেতাদের আনা-গোনা সব চেয়ে বেশি। নতুন নামে ও ডিজাইনের জিন্স প্যান্ট, শার্ট পাঞ্জাবি ও টি-শার্ট রাখা হয়েছে বিক্রয়ও হচ্ছে ভাল। এদিকে বারইয়ারহাটে ঈদ কেনাকাট করতে আসা রোমানা জানান, আমার পছন্দ কিরণমালা। দাম বেশি হলেও এটাই কিনব। আরেকজন স্ব-পরিবার নিয়ে আসা ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন জানান, এখনতো পরিবারের সদস্যদের আমরা পছন্দ করে দিলে হবে না। তাদের ইচ্ছেমত তারা নেবে। সেক্ষেত্রে দামের বিষয়টা দেখবাল করা হচ্ছে। তবুও তাদের চাহিদার সর্বোচ্চটা দিতে চাই। গ্রামীণ বাজার হিসেবে দামও মোটামুটি ক্রয় সীমার মধ্যে রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন