শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পীরগাছায় অপচিকিৎসা

পীরগাছা (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০৪ এএম

পেটের ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, বাত, আমাশয়, মেহ, প্রমেহ, ডায়াবেটিস, সর্দি-কাশি, অ্যাজমা ও যৌনরোগসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগের মতো যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করেন পীরগাছার হাতুড়ে কবিরাজ। আবার যে কোনো রোগীকে সুস্থ করে দেয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। রোগীদের সামনেই ওষুধ (হালুয়া) তৈরি করে দেন। এ ওষুধ খেয়ে রোগীরা সুস্থ হয়ে ওঠেন বলে দাবি তাদের। কবিরাজদের ১০ সদস্যের ১টি দল রংপুরের পীরগাছায় এসেছেন বিভিন্ন ধরনের ওষুধের গুড়ো নিয়ে। তাদের বাড়ি পাবনা ও সিরাজগঞ্জে।
সরেজমিনে দেখা যায়, একটি ফাঁকা জায়গায় কয়েকটি টেবিল সাজানো। টেবিলগুলোর ওপর সারি সারি পলিথিনের প্যাকেটে রাখা হয়েছে বিভিন্ন ওষুধের উপাদান। এসব ওষুধ দেখিয়ে রোগীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। মাইকে লালন নামে এক কবিরাজ বলেন, বাড়িতে বসে অনেকে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। কিন্ত আমরা আপনাদের সামনেই ওষুধ তৈরি করে দিবো। তার বাকি সঙ্গিরা ওষুধ তৈরিতে ব্যস্ত। ১ম দিন ওষুধ ফ্রি দেয়া হয়। খেয়ে উপকৃত হলেই তাদের কাছে ওষুধ বিক্রি করা হবে। ওষুধ নেয়ার জন্য প্রথমে রোগীর সমস্যা জানিয়ে ২০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কবিরাজ রোগীর সমস্যা মতো ওষুধ তৈরি করে তিনদিন পরে দিবেন। ওষুধ নেয়ার সময় দিতে হবে আরো এক হাজার টাকা।
উপজেলার মাঝবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আজিজল হক বলেন, চটকদার কথা শুনে ওষুধ নিয়েছিলাম কিন্তু ওষুধ খাওয়ার পর কোনো কাজই হয়নি। কাবিলা পাড়া গ্রামের বাবলু মিয়া বলেন, একবার যৌনরোগের জন্য ওষুধ কিনে খেয়েছি। খাওয়ার পর কোনো কাজ হয়নি। উল্টো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।
কবিরাজ লালন বলেন, আমাদের ওষুধে কোনো ভেজাল নেই। এগুলো বিভিন্ন গাছ-গাছড়ার শিকড়-বাকল দিয়ে তৈরি, যা বিভিন্ন রোগের কাজ করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ সৈকত জানান, এসব হাতুড়ে কবিরাজের চিকিৎসা নিয়ে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উত্তেজক ওষুধ আনন্দদায়ক মনে হলেও এর ভয়াবহতা আছে। দীর্ঘদিন খেলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাতুড়ে কবিরাজ থেকে দূরে থাকতে সচেতনতা বাড়ানো উচিৎ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু আল হাজ্জাজ বলেন, এখনও হাতুড়ে কবিরাজ দ্বারা যত্রতত্র অপচিকিৎসা হচ্ছে। এসব বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যবস্থা নেয়ার উচিৎ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন