অসময়েও ঠেকানো যাচ্ছে না তিস্তার ভাঙন। অব্যাহত ভাঙন মোকাবেলা করতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চরবাসী। গত ২০ দিনের ভাঙনে হাজারও একর জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে হাজারও একর আবাদি জমি।
গত বছরের ভয়াবহ বন্যার ধকল সেরে উঠতে না উঠতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার নদীর লাগামহীন ভাঙন চরবাসীকে নাকাল করে তুলেছে। ভাঙনের কারণে প্রতিনিয়ত চরবাসীরকে অসহনীয় কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহের কৃষকের স্বপ্ন নদী ভাঙনে বিলিন হচ্ছে।
পানি কমে যাওয়ার পর থেকে উপজেলার হরিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে ভাঙন শুরু হয়েছে। যতই পানি কমছে ততই ভাঙন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে হরিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের কানিচরিতাবাড়ি, মাদারিপাড়া, চর হরিপুর, পাড়াসাধুয়া, লালচামার, পুটিমারী, কেরানিরচর, ফকিরেরচর, কালাইসোতারচর, বাদামেরচর, কাজিয়ারচর ও রাজামিয়ার চরে তীব্র আকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
হরিপুর ইউনিয়নের কানিচরিতাবাড়ি গ্রামের গিয়াজ মিয়া জানান, ৬৫ বছর বয়সে তিনি ২৫ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন।
পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি আর নদী ভাঙন মোকাবেলা করতে পারছেন না। তিনি দুঃখ করে জানান, কখনও পৌষ মাসে নদী ভাঙন দেখিনি। গত ২/৩ বছর ধরে এ অবস্থা শুরু হয়েছে। কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন সরকার জানান, নদী পাড়ের মানুষ আমি নিজে। আমি জানি নদী ভাঙনের কষ্ট এবং জ্বালা যন্ত্রণা। নদী ভাঙন রোধে সরকারের বড় পদক্ষেপ ছাড়া আমাদের পক্ষে কোন কিছু করা সম্ভব নয়। কাপাসিয়া চরের কৃষক শান্ত ব্যাপারী জানান, যে বছরেই একটু মাথা তুলে দাড়াতে চাই, সে বছরেই নদীর বুকে স্বপ্ন ভেঙে যায়।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস সূত্র জানায়, নদী ভাঙন রোধ, সংস্কার, সংরক্ষণে বৃহৎ প্রকল্পের প্রয়োজন। এটি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তবে এর মধ্যে ৪০৬ কোটি টাকার একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী জানান, বর্তমানে তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে শুধু আবাদি জমি বিলিন হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন