হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলাধীন ১২ নং কালিয়ার ভাঙা ইউনিয়নের শতবর্ষী শ্রীমতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আবারও স্থানান্তর চক্রান্তের খবরে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৫ সালে জানুয়ারি মাসে সরকার থেকে ভবন নির্মাণ প্রজেক্ট আসায় তখন স্কুলটি একবার স্থানান্তরের চেষ্টা হয়েছিল। সেই সময় লন্ডন প্রবাসী ইদ্রিছ মিয়ার ছেলে মো. আবু তালিব মিয়া স্কুল স্থানান্তরের বিপক্ষে এবং দাতাসদস্যদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালের মার্চ মাসে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সায়মা সুলতানা স্কুলে এসে গ্রামবাসীকে নিয়ে মিটিং করেন এবং একটি কমিটি গঠন করার জন্য পরামর্শ দেন। এর পর ৪ নভেম্বর গ্রামবাসী মিলে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটিতে দাতাসদস্য শামীম চৌধুরীকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
গত বছর একাধিকবার ইঞ্জিনিয়ার এসে জায়গাটি সার্ভে করে মোট ১২ শতক জায়গার প্রয়োজন উল্লেখ করেন। স্কুলের ১০ শতক জায়গার সাথে আর দুই শতক জায়গা দাতার ভাতিজা সেলিম চৌধুরী গং স্কুলের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার পর উক্ত জায়গায় তিন রুম বিশিষ্ট দোতলা ভবন প্রজেক্ট পাশ হয়। একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়ে এ বছরের শুরুতে মালপত্র এনে জমা করেন এবং মিস্ত্রিরা রডকাটা ও আনুসাঙ্গিক কাজ শুরু করে দেন। এরই মধ্যে আবু তালিব মিয়া তার ভাই-ভাতিজাদের নিয়ে স্কুল সরিয়ে নেওয়ার জন্য গ্রামের বিশিষ্টজনদের কাছে প্রস্তাব দিলে তারা বলেন, স্কুল ভবন নির্মাণের অর্থ যখন বরাদ্দ হয়ে গেছে এবং কাজও শুরু হয়েছে সেহেতু স্কুল এখানেই থাকুক। তোমাদের যখন সামর্থ্য আছে তোমরা তোমাদের জায়গাতে হাইস্কুল বা কলেজ করতে পার। এই প্রস্তাবে গ্রামবাসী রাজি না হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক চৌধুরী সেলিমের কাছে গিয়ে অনুরোধ করেন যেনো স্কুলটা তার নিজের জায়গাতে সরিয়ে নেয়া হয়। সেই সময় দাতাসদস্য ও সভাপতি শামীম চৌধুরীর সঙ্গে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের কথায় আশ্বস্থ হতে না পেরে পরের দিন তার চাচাত ভাই আলি মিয়াকে দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্কুলের স্থান বর্ধিত করার জন্য আবেদন করেন, যা গত ৫ জানুয়ারি হবিগঞ্জের জনতার এক্সপ্রেস ও দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকায় ‘শ্রীমতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থান বর্ধিত করার জন্য প্রশাসনে হস্তক্ষেপ কামনা’ শিরোনামে সংবাদটি ছাপা হয়। ৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের জনতার এক্সপ্রেস পত্রিকায় স্কুলের পক্ষে প্রতিবাদলিপি ছাপা হয়। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামীম চৌধুরী বলেন, ভবনটি নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ হওয়ার পরও কেন এই ষড়যন্ত্র? সরকারি কাজে বাধা দেওয়া গুরুতর অপরাধ এবং আইন অমান্য করার সামিল। গ্রাম বাসিরা বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করায় এখন দেশের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে স্কুল হয়েছে। এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠার জন্মলগ্ন থেকে এলাকার ছেলে মেয়েরা এই স্কুলে এসে লেখাপড়া করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন